বুধবার পণ্য ও টাকা ফেরতের (রিফান্ড) চেক নিতে অফিসের সামনে আসেন অর্ধশতাধিক গ্রাহক। তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দেন।
ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা বলেন, রোববার থেকে এখানে কেউ অফিস করছেন না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা–পুলিশ। পরে পুলিশ গ্রাহকদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
এদিকে আলেশা মার্টের অফিস বন্ধ হয়ে গেছে বলে সোমবার রাত থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে অফিস বন্ধের খবরকে গুজব বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ফেসবুকের পোস্টে আলেশা মার্ট বলেছে, তাদের কার্যক্রম চালু রয়েছে ও দুটি কার্যালয়ই খোলা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলন করা হবে। তবে এদিন তারা কোনো সংবাদ সম্মেলন করেনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলম শিকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মো. সোহাগ টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে মোটরসাইকেল সংগ্রহ করতে তিন দিন আগে ঢাকায় আসেন। মঙ্গলবার বিকেলে আলেশা মার্টের অফিসের সামনে তাঁর সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ২৯ জুন ৩৫ শতাংশ ছাড়ের অফারে একটি মোটরসাইকেল অর্ডার করেছিলাম। প্রতিষ্ঠানের দেওয়া নির্দিষ্ট কর্মদিবস অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তারা আমার পণ্য দেয়নি।’
সোহাগ আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘ঢাকায় আসার আগে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকসেবা কেন্দ্রে ফোন করেছিলাম। তারা ঢাকায় এসে অফিসে যোগাযোগ করে টাকা ফেরতের চেক নিয়ে যেতে বলে। তাদের আশ্বাসে রোববার আমি ঢাকায় এসেছি। তিন দিন ধরে বনানী ও তেজগাঁও অফিসে ঘুরছি। কোনো সমাধান পাচ্ছি না। তাদের বনানী অফিস গেলে তেজগাঁও অফিসে যোগাযোগ করতে বলে। তিন ধরে তেজগাঁও এসে অফিস বন্ধ পাচ্ছি।
সোহাগের মতো ফরমাশ করা পণ্য বুঝে নিতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তেজগাঁও এসেছেন মো. রাজন। তিনি প্রথম আলোকে অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রায় ১০ লাখ টাকার বিভিন্ন পণ্যের ফরমাশ দিয়েছিলাম। কিছু পণ্য পেয়েছি, তবে এখনো দুটি মোটরসাইকেলসহ সাত লাখ টাকার পণ্য পাব। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বুধবার সংবাদ সম্মেলনের কথা ছিল। ভেবেছিল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করবে তারা। কিন্তু সেটাও হলো না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাসরিন ভবনের একাধিক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, সর্বশেষ রোববার অফিসে লোকজন এসেছিলেন। সোমবার থেকে অফিসটি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল। যে কারণে অনেক গ্রাহক তাদের অফিসের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। সংবাদ সম্মেলন না হওয়ায় তাঁরা চলে গেছেন।