ঢাকা মহানগরীতে চলাচল করা বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চলছেই। আবার সিটিং ও গেটলক সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে তা হয়নি। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযানে নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে মামলা, জরিমানা আদায়ও চলছে। বিআরটিএর পাশাপাশি বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারাও অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। এসবই চলছে শুধু ঢাকার সড়কে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বাসের সিটিং ও গেটলক সেবা গত বুধবার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তিন দিনের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়। সেই তিন দিন পার হয়ে আরো তিন দিন চলে গেল। কিন্তু বন্ধ হয়নি কথিত এই সার্ভিস। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে এসব বাস চলাচল করতে দেখা যায়। এ নিয়ে বাসের চালক, চালকের সহযোগী ও যাত্রীর মধ্যে বাগবিতণ্ডাও চলে।
সিটিংয়ে চলা এক বাসের চালক বলছেন, ‘বাসের মালিক এখনো কিছুই জানান নাই। মালিকরা কিছু না কইলে আমরা লোকাল করি কেমনে। সিটিং হিসাব করে গাড়ি জমা দিতে হয়। আর এদিক দিয়ে যাত্রীরা কয় লোকাল ভাড়া দিবে।’
ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার জেরে মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ড ও কালশী রোডে কয়েকটি বাসের শ্রমিকরা বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেন। পরে মিরপুর থেকে এয়ারপোর্ট-আব্দুল্লাহপুর ও নতুনবাজার পথে গতকাল দুপুরে বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
হাফ পাসের দাবিতে ছাত্রদের বিক্ষোভ : বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পর থেকেই সব ধরনের গণপরিবহনে হাফ পাসের দাবি করে আসছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। গতকাল উত্তরা রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শনির আখড়ার দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে ছাত্র-ছাত্রীরা। এতে এর আশপাশের সড়কে লম্বা যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটে আটকে পড়া বিভিন্ন বাসের গায়ে রং দিয়ে ‘হাফ পাস আছে’ লিখে দিতে দেখা যায়।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কার্য নির্বাহী সদস্য তামিম তুরাগ বলেন, ‘হাফ পাস চাওয়ায় রজনীগন্ধা বাস থেকে এক ছাত্রকে নামিয়ে দেওয়া হয়। তার পর দুপুর দেড়টার দিকে দুই আড়াই শ ছাত্র বাসে হাফ পাসের দাবিতে রাস্তায় অবস্থান নেয়।’
বিআরটিএর অভিযানে জরিমানা : বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩৪২টি বাস ও মিনিবাসে অভিযান পরিচালনা করে বিআরটিএ। এর মধ্যে তিনটি সিএনজিচালিত ও ১০১টি ডিজেলচালিত বাসকে চার লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া একই অপরাধ আবার করায় একটি বাসকে ডামিপংয়ে দেওয়া হয়েছে এবং দুজন দালালকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।