আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রিন্টিং প্রেসের কর্মচারীদের সিন্ডিকেট পাঁচ ব্যাংকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সর্বশেষ পাঁচ ব্যাংকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাড়াও অনেক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপা হয় ওই প্রিন্টিং প্রেসে।
পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে বুধবার এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা প্রত্যেকেই আহসানিয়া মিশনের প্রিন্টিং প্রেসের কর্মী। প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় এ নিয়ে গ্রেপ্তারে সংখ্যা দাঁড়াল ১২ জন।
সর্বশেষ গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিশিয়ান ল্যাব সহকারী পারভেজ মিয়া, আহসানিয়া প্রিন্টিং প্রেসের অফিস সহকারী (পিয়ন) দেলোয়ার হোসেন ও কাটিং মাস্টার রবিউল আওয়াল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি ওয়াহিদুল ইসলাম সমকালকে জানান, ওই তিনজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ জানায়, পাঁচ ব্যাংকে নিয়োগ পরীক্ষার দুইদিন আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। পিয়ন দেলোয়ার পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র বের করার অনুরোধ করে প্রেসের কাটিং মাস্টার রবিউলকে। পরে সে ল্যাব সহকারী পারভেজ মিয়ার হাতে প্রশ্নপত্র তুলে দেয়। ওই সময় তার সঙ্গে আহসানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনিশিয়ান মুক্তারুজ্জামানও ছিলেন। এই মুক্তারুজ্জামানকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেলোয়ার ও রবিউল এক লাখ টাকা পেয়েছে বলে জানান ডিবি কর্মকর্তা ওয়াহিদুল।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, জবানবন্দিতে ওই তিনজন প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এর আগে পাঁচ ব্যাংকের প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত এই চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় গত ৬ নভেম্বর আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এক হাজার ৫১১টি পদে জনবল নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এই পাঁচ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ডিবি পুলিশও ফাঁস চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা জানায়। এরপরই ওই পরীক্ষা বাতিল করা হয়।