ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রভাবশালীদের সুপারিশে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন ‘অজনপ্রিয়’ প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায়ে নেতাদের ‘ম্যানেজ’ করা হয়েছে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। তাদের মতে, এসব কারণে অনেক স্থানেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের (ক্ষমতাসীন দলের বিদ্রোহী) কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। এমনকি জামানত হারিয়েছেন কেউ কেউ।
এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত তিন ধাপের নির্বাচনেই দেখা গেছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের জয়জয়কার। যদিও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের দাবি-ত্যাগী ও যোগ্যদেরই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত নেতারা অনেক ক্ষেত্রেই পরিকল্পিতভাবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ওপর ভর করছে। ফলে কোনো কোনো স্থানে নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই যোগ্য ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে দু-একটি ক্ষেত্রে যে আমাদের কিছু ভুল-ত্রুটি হয় না তা নয়। কারণ প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ খুব কম সময়ের মধ্যে করতে হয়।
তৃণমূল থেকে ‘অজনপ্রিয়’ ও বিতর্কিতদের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। তাদেরও এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের দমাতে না পারার কারণ প্রসঙ্গে কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়টা আমরা খুব দুঃখের সঙ্গে খেয়াল করছি। তবে আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি দলের প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে।
এদিকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, বর্তমানে রাজনীতি জনসেবার চেয়ে বেশি ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। ফলে সবাই যে কোনো উপায়ে দলের মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে চাইছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেলেই জয়ী হওয়া যাবে-এমন ধারণা অনেকের।
রাজনীতি করে নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তির জন্য, অন্যায় করে পার পাওয়ার জন্য। এটাকে কাজে লাগিয়ে অন্যায় সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য। তাই তারা যে কোনো উপায়ে এই পদ-পদবিগুলো পেতে চায়। জানা গেছে, তৃতীয় ধাপের ভোট হওয়া ৯০১ ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পেয়েছেন ৪৪৫টিতে। যাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিতেছেন ৪২৬ ইউপিতে। এর আগে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৮৩৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৪১টিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩৬টি ইউনিয়নে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই অর্থাৎ দ্বিতীয় অবস্থানেও ছিলেন না দলের প্রার্থীরা। বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপট ছিল প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনেও।
দুই দফায় অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনের প্রথম পর্বে ২১ জুন অনুষ্ঠিত ১৬৯টি ইউপি নির্বাচনে ৪৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ছিলেন। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ১১৭টি ইউনিয়নের ৭৬টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আর বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিল ২৪ জন।
তৃতীয় ধাপে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মাত্র ৪টিতে জয় পেয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। স্থানীয় সংসদ সদস্যের এলাকাতেও জয় পাননি নৌকার প্রার্থী। বগুড়া সদর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। আটটি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র দুটিতে বিজয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থী।
অবশিষ্ট ছয়টি ইউনিয়নে স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন নৌকা মার্কার প্রার্থীরা। নওগাঁর মান্দা উপজেলার ১৪ ইউপির মধ্যে ১১টিতেই জিতেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সাত ইউপির মধ্যে স্বতন্ত্র জিতেছে ৬টিতে। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জেও একই অবস্থা, ১২ ইউপির মধ্যে নয়টিতেই হেরেছে নৌকার প্রার্থী। জিতেছে মাত্র তিনটিতে।
দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন ছাড়াই নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাকি। জানতে চাইলে যুগান্তরকে তিনি বলেন, আমি অনুপ্রবেশকারী নই। আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান।
এলাকার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সবাই আমার পক্ষে। তাদের চাপেই আমি নির্বাচন করেছি। আমার জনপ্রিয়তা ছিল তাই বিজয়ী হয়েছি। কিন্তু যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল, কেন দেওয়া হয়েছিল, কীভাবে দেওয়া হয়েছিল আমি জানি না।
একই উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর রশিদ বাবলু। জানতে চাইলে যুগান্তরকে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী পরিবারের ছেলে আওয়ামী লীগ করি।
আমাদের এখানে ১০ জন স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছেন। দলীয় মনোনয়ন ‘অজনপ্রিয়’ লোককে দেওয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বেশি কিছু বলতে পারব না। তবে এটুকু বলি, আমার জনপ্রিয়তা ছিল তাই আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছি।
কলমাকান্দা উপজেলা রংছাতি ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক তাহেরা খাতুন। তিনি বলেন, আমাকে দল থেকে নৌকার মনোনয়ন দিলেও উপজেলার অনেক নেতাকর্মী নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করেছেন। তাই দলীয় মনোনয়ন পেয়েও অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছি।
কলমাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সহসভাপতি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আলী বিশ্বাস বলেন, আমি সাবেক চেয়ারম্যান ও এলাকায় আমার জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও দল আমাকে মনোনয়ন দেননি। তাই জনসাধারণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করি এবং বিপুল ভোটে জয়লাভ করি।
কলমাকান্দায় নৌকার ভরাডুবির বিষয়টি জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাস বলেন, আমরা তৃণমূল থেকে যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রে যে তালিকা প্রেরণ করেছি, সে অনুযায়ী দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় চারটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন।
এর আগে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি হয়। নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর একটি কেন্দ্রেও জিততে পারেননি। ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি ভোটকেন্দ্রেই তিনি হারেন।
পরে তিনি পরাজয়ের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কারণেই আমি হেরে গেছি। তারা ষড়যন্ত্র করে নৌকাকে ডুবিয়ে দিয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীকে সরিয়ে দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
তবে কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার বলেন, নৌকাকে বিজয়ী করতে তারা যা কিছু করণীয় তার সবই করেছেন। আমাদের কোনো ক্রটি ছিল না। স্থানীয় কিছু নেতাকর্মী বিদ্রোহীর পক্ষে যাওয়াতে ক্ষতি হয়েছে।
বিদ্রোহী প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করা হয়েছে। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডালিম কুমার দাস শ্রীপদকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরও দলীয় প্রার্থীকে জেতানো যায়নি।
শুধু তাই নয়, তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনেক জায়গায় নৌকার চরম বিপর্যয় ঘটেছে। কোথাও দলীয় বিদ্রোহী, কোথাও স্বতন্ত্র প্রার্থীর আড়ালে বিএনপি, কোথাও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কাছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয়ের চিত্র পাওয়া গেছে।
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জান্নাতুল বকেয়া পেয়েছেন মাত্র ৯৯ ভোট। তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম সংখ্যক ভোট পাওয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জান্নাতুল বকেয়া রেখা যুগান্তরকে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করায় ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে।
এছাড়া চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছী ইউপিতে নৌকার প্রার্থী সমীর কুমার দে পেয়েছেন মাত্র ১০২ ভোট। পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সয়না রঘুনাথপুরে নৌকার প্রার্থী এইচ এম আর কে খোকনের ভোট সংখ্যা ১২০ ভোট। কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাজেম উদ্দিনের ভোট মাত্র ১৪৫। নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী তারা জামানত হারিয়েছেন।
নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পরাজয়ের কারণ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি-জামায়াত থেকে আমাদের দলে অনুপ্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। দল থেকে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অন্য জনপ্রিয়দের উসকানি দিয়ে প্রার্থী করছে যাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যায়।
আবেগের বশবর্তী হয়েও অনেক প্রার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। আগের নির্বাচনগুলোতে বিদ্রোহীদের ওইভাবে বহিষ্কার করা হয়নি। এসব কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ এলাকায় কতটিতে নৌকা ও বিদ্রোহী হয়েছেন তা বের করার। সেই আলোকে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী লীগের মতো বড় রাজনৈতিক দলে প্রতিটি ইউনিয়নে অনেকে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী থাকেন। কিন্তু মনোনয়ন দিতে হয় একজনকে।
তাদের জনপ্রিয়তায় খুব বেশি একটা পার্থক্য থাকে না। ফলে মনোনয়ন দেওয়া ভুল হয়েছে-আমি এটা মনে করি না। সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিলে এত বিদ্রোহী থাকত না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, কারা নৌকা পাচ্ছে, কাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে, সেখানে তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু রয়েছে, নাকি তৃতীয় পক্ষ নৌকার প্রতীক চাচ্ছে-সবই জানতে হবে। অনেকে কষ্ট পেয়ে বিদ্রোহী হয়েছেন, কিন্তু তাদের বোঝানোর দায়িত্বটা কে নেবে? উৎসবমুখর ভোট এখন দলের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এখনই এগুলোর কারণ বিশ্লেষণ করতে হবে।
সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নে গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন আতিকুর রহমান খান শান্ত। সে সময় এখানে নৌকা পান চারবারের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম খান। তাকে হারিয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে নৌকা ডুবিয়ে চেয়ারম্যান হন শান্ত। প্রভাবশালী একটি মহল এবারও ইউপি নির্বাচনে তাকেই নৌকা দিতে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেছে।
গতবার নৌকা পাওয়া এবং চারবারের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের নাম নেই সেই তালিকায়। এদিকে আতিকুর রহমান খান শান্তর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবর চিঠি দিয়েছে, ঢাকা ১৪ আসনের সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু।
এদিকে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পরাজয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের জয়ের কারণ খুঁজতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। সাংগঠনিক সম্পাদকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ বিষয়ে কাজও শুরু করেছেন।
সারা দেশেই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ে এমপি-মন্ত্রীসহ স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগও পেয়েছেন তারা। যাচাই-বাছাই শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক যুগান্তরকে বলেন, নৌকার বিপক্ষে ও বিদ্রোহীদের পক্ষে যারা কাজ করেছেন আমরা তাদের চিহ্নিত করছি। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায় থেকে পাঠানো সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় গলদ থাকায় প্রার্থী নির্বাচনে সংকট হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সমন্বয়ও ছিল না। এছাড়া অনেক জায়গায় বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছে, ফলে বিদ্রোহীরা জয়লাভ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।