সার্ভার জটিলতার কারণে সুরক্ষা ওয়েবসাইট থেকে সারা দেশের ২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৬১ জন টিকা গ্রহীতার তথ্য উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারা গত ১৩ অক্টোর টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছিলেন। এনিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন ভোক্তভোগীরা। তবে সুরক্ষা ওয়েবসাইট থেকে তথ্য উধাওয়ের কোনো সুযোগ নেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদফতর।
অধিদফতরের প্রোগ্রামার ও সুরক্ষা ওয়েব পোর্টালের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, তথ্য উধাওয়ের বিষয়ে আইসিটির সুরক্ষা প্রোগ্রামের কাছে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। এছাড়াও এখানে ডাটা মিসিং হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, ২-৩টি ধাপে সুরক্ষায় ডাটাগুলো সংরক্ষণ করা হয়। এমনকি সুরক্ষায় সব ডাটা রিকোভারিরও সুযোগ আছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্তকর্তা জানান, সার্ভারের জটিলতার কারণেই গত ১৩ অক্টোবর সারা দেশে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৬১ জন টিকাগ্রহীতার টিকা গ্রহণের তারিখ সুরক্ষা ওয়েবসাইটের সার্ভার থেকে উধাও হয়ে গেছে। তারা বলছেন, ইতোমধ্যে এমন একাধিক অভিযোগ স্বাস্থ্য অধিদফতরে আসছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। যাদের তথ্য গায়েব হয়েছে, তাদের কিছুদিন পর নতুন করে টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, সার্ভার জটিলতার কারণে ওই দিন হয়তো এমনটা হতে পারে। টিকাগ্রহীতার টিকা নেয়া তারিখ খুঁজে না পাওয়ায় ইতোমধ্যে বিষয়টি আইসিটি বিভাগকে জানানো হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সমস্যার সমাধান হলে ওই দিনের টিকাগ্রহীতারা নতুন করে টিকা কার্ড ডাউনলোড করলে ৮০ শতাংশই টিকা গ্রহণের তারিখ পেয়ে যাবেন। বাকি ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে যে সমস্যাটা তৈরি হবে, তা সরাসরি আইসিটি বিভাগকে জানানো হবে। আশা করা যায়, এরপর তাদের সমস্যারও সমাধান হবে। এমন কোনো সমস্যা দেখা দিলেই স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বিষয়টি আইসিটি বিভাগকে জানিয়ে দেয়া হয়। এ বিষয়টি ইতোমধ্যে আমরা জানিয়ে দিয়েছি। তারা জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘শুধু ১৩ অক্টোবর নয়, ওই মাসের ২৮ তারিখেও দেশের কিছু কেন্দ্রে এমন সমস্যা দেখা দেয়। তা নিয়েও কাজ করছে আইসিটি বিভাগ।’
সুরক্ষা অ্যাপে টিকার জন্য নিবন্ধনের তিন মাস পর ১৩ অক্টোবর জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেন নুসরাত জাবীন। নিয়ম অনুযায়ী টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার কথা এক মাস পর। তবে দেড় মাসের বেশি সময় পার হলেও টিকাসংক্রান্ত এসএমএস পাননি তিনি। এক প্রকার নিরুপায় হয়ে দ্বিতীয় ডোজ নিতে ২ ডিসেম্বর টিকাকেন্দ্রে যোগাযোগ করেন তিনি। কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলেন, ১৩ অক্টোবর যারা টিকা নিয়েছেন তাদের তথ্য সার্ভার থেকে ডিলিট হয়ে গেছে। যে কারণে ওই দিনে টিকা নেয়া কাউকেই এসএমএস দেয়া সম্ভব হয়নি। নিজ উদ্যোগে যারা টিকাকেন্দ্রে আসছেন তাদের টিকাদানের তারিখ আপডেট করে দেয়া হচ্ছে। এরপর দু-একদিনের মধ্যে তাদের এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। এতে নতুন করে ভোগান্তিতে পড়ছেন টিকার প্রথম ডোজ গ্রহীতারা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘এমন তথ্য আমার জানা নেই। তবে এমনটা হয়ে থাকলে বিষয়টি অবশ্যই আইসিটি বিভাগে জানানো হবে।’
তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদফতরের প্রোগ্রামার ও সুরক্ষা ওয়েব পোর্টালের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, তথ্য উধাওয়ের বিষয়ে আইসিটির সুরক্ষা প্রোগ্রামের কাছে এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। এছাড়াও এখানে ডাটা মিসিং হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, ২-৩টি ধাপে সুরক্ষায় ডাটাগুলো সংরক্ষণ করা হয়। এমনকি সুরক্ষায় সব ডাটা রিকভারিরও সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, সুরক্ষা থেকে উধাওয়ের কোনো সুযোগ নেই। তবে যদি কোনো কেন্দ্র টিকার তথ্য হালনাগাদ না করেন, সেটার দায় আমাদের নয়, সেটা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে।