সরবরাহ বাড়লেও সবজির বাজার চড়া

সরবরাহ বাড়লেও সবজির বাজার চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মকিদুর রহমান।
তিনি বলেন, বছরজুড়েই বাজারে সবজির দাম চড়া। বাজারে বেশিরভাগ সবজিই ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দুই একটি সবজি ৪০ টাকায় আছে। কিন্তু অন্যান্য বছরগুলোতে এই সময় সবজির দাম আরো অনেক কম ছিল।
মধ্যবাড্ডা এলাকার একজন সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেশি। তাই খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে। শীতের সবজি পরিপূর্ণভাবে বাজারে আসলে এই দাম কমে যাবে। তবে কিছুদিন আগের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে। এই দাম আরো কমবে।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রাকে সবজিসহ অন্যান্য কাঁচামাল রাজধানীতে আসে। বর্তমানে ট্রাকের ভাড়াও বেশি। সব মিলিয়ে সবজির দাম কিছুটা চড়া আছে। কিছুদিনের মধ্যে বাজারে নতুন সবজি আসলেই এই দাম অনেক কমে যাবে।
বাজারে বেড়েছে আলুর দাম। প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২০ থেকে ২৫ টাকায়। নতুন আলুর কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজে ১৫ টাকা বেড়েছে। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫৫-৬০ টাকায়।

কালশী বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা কমল হোসেন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১৫ টাকা বেড়েছে। আমদানি কম, ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও বেড়েছে রসুনের দাম। ইন্ডিয়ান ও চায়না রসুনের দাম বেড়েছে। ইন্ডিয়ান রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। আগে বিক্রি হতো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। চায়না রসুনের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। আগে বিক্রি হতো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি।

মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের পেঁয়াজ-রসুন বিক্রেতা মো. কবির হোসেন বলেন, আমদানি কম থাকায় দাম বেড়েছে রসুনের। মৌসুম শেষের দিকে এমনিতেই বাড়তি দাম থাকে। বাজারে সরবরাহ কম থাকলে সবাই পেঁয়াজ-রসুন কিনতে চায়। আর এ সময় বেড়ে যায় দাম।

এসব বাজারে কাঁচামরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। পেঁপে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়। এছাড়া শুকনা মরিচ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা ও আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। হলুদের কেজি ১৬০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। দেশি ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এসব বাজারে প্রতি লিটার ভোজ্যতেল খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তেলের লিটারও বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা। আর লাল লেয়ার মুরগি আগের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা।

মুরগির দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী মো. সালাম শেখ জানান, গতকাল সকালেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫৫ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু রাতে পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখি দাম বেড়ে গেছে। বেশি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করছি।

তিনি বলেন, এই ছুটির দিনটায় ব্রয়লার মুরগির চাহিদা একটু বেশি থাকে। আমাদের ধারণা দাম বাড়ার এটি একটি কারণ। তাছাড়া বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহও কিছুটা কম আছে। তবে সোনালি মুরগির সরবরাহ বেশ ভালো। এ কারণে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও সোনালি মুরগির দাম কমেছে।

বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। সোনালী (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।

পাশাপাশি বাজারে বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ২০ টাকা দাম বেড়ে সোনালি মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে সোনালি মুরগির কেজি ছিল ২৩০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা।

১১ নম্বর বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. রুবেল বলেন, মাসের শুরু আর শুক্রবার হওয়াতে মুরগির দাম বেড়েছে। চলতি মাসে বন্ধ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকায় মুরগির দাম আরো বাড়বে।

শীর্ষ সংবাদ