বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা) ঋণ দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২১-২২ অর্থবছরের চলতি জাতীয় বাজেটে সহায়তার অংশ হিসেবে এই ঋণ দিচ্ছে দেশটি। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের মধ্যে ‘প্রোগ্রাম লোন ফর সাসটেইনেবল ইকোনমিক রিকভারি’ সংক্রান্ত এক ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তার অংশ হিসেবেই ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) থেকে এ ঋণ সহায়তা অনুমোদন দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডির অনুবিভাগের এশীয় উইংয়ের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষে কোরিয়া ইক্সিম ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কিম তে সো ঋণ চুক্তিতে সই করেন। ইআরডি থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোরিয়া সরকার কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে নমনীয় ঋণ সহায়তা দিয়ে আসছে। এ ঋণ নমনীয় প্রকৃতির, যার বাৎসরিক সুদের হার মাত্র শূণ্য দশমিক ০৫ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধকাল ১৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৪০ বছর।
ইআরডি জানায়, এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ঘাটতি বাজেটের জন্য বৈচিত্র্যময় উৎস সৃষ্টি হবে। এছাড়া প্রোগ্রামের আওতায় ইসলামিক ব্যাংকগুলোকে সরকারের ঋণ গ্রহণ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তি করা, ডিজিটালাইজেশনসহ উন্নত কর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর ফাঁকি রোধ এবং ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে কর্মসূচির মাধ্যমে করদাতার সংখ্যা বাড়িয়ে আয়করের পরিমাণ বাড়ানো হবে। পাশাপাশি দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নত কর সেবা প্রদান, উইথহোল্ডিং করের জন্য ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে উন্নত ব্যবস্থাপনা, করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং অর্থনীতির গতি পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নতুন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির অধীনে বাস্তবায়িত প্রথম ঋণচুক্তি এটি। এর আগে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছিল।
চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত নমনীয় ঋণ দেবে। বিশ্বব্যাপী ইডিসিএফ ঋণপ্রাপ্তির দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত কোরিয়া প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশের ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পে ইডিসিএফের মাধ্যমে অর্থায়ন করেছে। যার মোট পরিমাণ ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।