বরগুনা প্রতিনিধি
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, বিএনপি জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আমাদের দলে ঢুকে পুনর্বাসিত হচ্ছে, এতে আমাদের দলের চরম ক্ষতি সাধন হচ্ছে আমি মনে করি, এটা স্বাধীনতাবিরোধী চক্র জামায়াত-শিবির ও বিএনপির পরিকল্পিত নীলনকশা। আমাদের সংগঠনকে ধ্বংস করা এবং আমাদের মধ্যে ফাটল ধরানের একটা অপচেষ্টা, দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের দল ১২ বছর রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকার পরেও দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। অথবা মনের দুঃখে ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে রয়েছে। মিথ্যা মামলায় আর এদের দীর্ঘশ্বাসে আমরা যুবলীগ ধ্বংস হয়ে যাব। এদের দীর্ঘশ্বাস আমাদের ধ্বংস ডেকে আনবে। আমাদের উচিত এদের সম্মান দেওয়া। এদের মূল্যায়ন করা। দলের মধ্যে ভুঁইফোড় অনুপ্রবেশকারীরা রামরাজত্ব করতেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এদের বিরুদ্ধে বর্তমান যুবলীগ নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে বরগুনা জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। বরগুনা টাউন হল মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ্য করে শেখ ফজলে শামস বলেন, যেকোনো কাজে সফলতা পেতে সুষ্ঠু ও সুশৃংখল যোগ্য নেতৃত্বের কারণে অসাধ্য সাধন করা যায়। সঠিক নেতৃত্বের প্রভাবে একটা পরিবার প্রতিষ্ঠা এমনকি বিশ্ব বদলে যেতে পারে। একজন যোগ্য নেতার নেতৃত্বের হাত ধরে একটা নতুন সমাজ বিনির্মাণ হতে পারে। তাই সৎ সাহসী এবং সহানুভূতিশীল নেতৃত্ব চর্চার বিকল্প নাই। জাতির উত্থান-পতন অনেকাংশে নির্ভর করে সঠিক নেতৃত্বের ওপর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের সামনেই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
শেখ ফজলে শামস আরো বলেন, যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বলতে চাই আজীবন সংগ্রামের মাধ্যমে পৃথিবীর অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনা আজ সর্বজনস্বীকৃত। তিনি সাফল্যের কখনো শর্টকাট বুঝেন নাই। তার পিতার হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার আইনে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে করতে পারতেন। তিনি তা করেন নাই। আপস করলে বিদেশি প্রভুদের সঙ্গে আপস করে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারতেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করে এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যুগান্তকারী উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যার কৃতিত্বে ও দূরদর্শিতায় আমরা প্রায় ১২ বছর রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রয়েছি। পরিতাপের বিষয় ১২ বছর থেকেও আমাদের দুর্দিনের অগণিত নেতাকর্মী এখনো অবহেলিত এবং নির্যাতিত হচ্ছে। কিছু অসাধু তথাকথিত নেতৃত্বে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে পরীক্ষিত দুঃসময়ের নেতা-কর্মীদের দল থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। এটা সংগঠনের জন্য অপরিসীম ক্ষতিকর।
জেলা যুবলীগের সভাপতি মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ অতিথি বরগুনা-১ আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সুলতানা নাদিরা জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলে ফাহিম, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, সাংসদ মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম।
দলীয় সূত্র জানায়, জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৫ সালে। সম্মেলনে কামরুল আহসানকে সভাপতি ও সাহাবুদ্দিন সাবুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর জেলা যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে নেতা–কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সম্মেলনে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকার নেতা–কর্মীরা রংবেরঙের পোশাক পরে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে আসতে থাকেন। সম্মেলন শুরুর আগেই পুরো টাউন হল মাঠ আগত নেতা–কর্মীদের উপস্থিতি এবং স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে। বিকেল ৫টায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়েছে। সন্ধ্যার পর জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন চলছে।