চট্টগ্রাম বন্দরে কাগজে লুকিয়ে আনা সিগারেটের জাল স্ট্যাম্পের আরও একটি চালান জব্দ করেছে কাস্টমস। আর এর মাধ্যমে এক কোটি ৬২ লাখ সিগারেটের প্যাকেটে জাল ব্যান্ড রোল (স্ট্যাম্প) ব্যবহার করে ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব চুরির অপচেষ্টা ভুন্ডল হয়ে গেছে। চীন থেকে ছাপিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় এ-ফোর কাগজের আড়ালে চালানটি আনা হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে চালানটি আটকের তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর তিন কোটি ১৯ লাখ ৮০ হাজার পিস ১০ শলাকা বিশিষ্ট সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহার উপযোগী জাল ব্যান্ড রোলের আরও একটি চালান জব্দ করে চট্টগ্রাম কাস্টমস। ওই চালানটি খালাস হয়ে গেলে সরকার সর্বনিম্ন ৯০ থেকে ১৪৩ কোটি টাকা রাজস্ব হারাতো।
কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা জানান, ওই চালানটি ধরা পড়ার পর আরও একটি চালান আসছে এমন খবর আসে। এ চালানটিতেও মিথ্যা ঘোষণায় জাল ব্যান্ড রোল আনা হচ্ছে তা নিশ্চিত হওয়ার পর শুরু হয় নজরদারি। চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে ঢুকতেই বিএল বøক করে দেয়া হয়।
নগরীর জুবিলী রোডের কাদের টাওয়ারের চতুর্থতলার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আরাফাত এন্টারপ্রাইজের নামে চালানটি বন্দরে আসে। ঘোষণা ছিল এ-ফোর পেপার অল পারপাস, ডিডিজি এমডব্লিউ ৮০জিএসএম। এ চালানের বিপরীতে ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড জুবিলী রোড থেকে এলসি ইস্যু হয়েছিল গত ৮ নভেম্বর।
জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামার পর গতকাল ফোর্স কিপ ডাউনের মাধ্যমে কন্টেইনারটি নামিয়ে কায়িক পরীক্ষা শুরু করে কাস্টম হাউসের এআইআর টিম। পুরো কন্টেইনার পরীক্ষার পর দেখা যায়, তাতে রক্ষিত ১২টি প্যাটেলের মধ্যে শেষ চারটি প্যাটেলে সর্বমোট ১২০ কার্টনে এক কোটি ৬২ লাখ (১২শ কেজি) বাংলাদেশে সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহার উপযোগী হালকা সবুজ ও হালকা খয়েরী রংয়ের জাল স্ট্যাম্প পাওয়া যায়। অবশিষ্ট এক হাজার ১৪০ কার্টনে পাওয়া যায় কাগজ। এক কোটি ৬২ লাখ সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহার করা যেত। এ পণ্য চালানটি খালাস হয়ে গেলে সরকার শত কোটি টাকার রাজস্ব হারাতো।
উল্লেখ্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এসআর অনুযায়ী স্ট্যাম্প বা ব্যান্ড রোল দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ হতে সংগ্রহ করতে হয় এবং সংশ্লিষ্ট কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার কর্তৃক দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ এবং সিগারেটর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটি প্রতি তিন মাস অন্তর প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সিগারেট স্ট্যাম্প ও ব্যান্ড রোল সরবরাহ এবং ব্যবহার আড়াআড়ি যাচাইপূর্বক প্রতিবেদন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মূসক বাস্তবায়ন শাখায় প্রেরণ করতে হয়।
ফলে এ জাতীয় পণ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয় করা অথবা বিদেশ থেকে আমদানি করার কোন সুযোগ নেই। মিথ্যা ঘোষণায় অবৈধ পণ্য আমদানির সাথে জড়িত আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা।