তরুণীকে ভিডিও দেখিয়ে ২ বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ!

তরুণীকে ভিডিও দেখিয়ে ২ বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ!

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় প্রেমের সম্পর্কের সুযোগে প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করা হয়। তারপর সেই ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে দুই বছর ধরে মেয়েটিকে ধর্ষণ ও পরে গর্ভপাত করার অভিযোগ উঠেছে বুলবুল আহমেদ বিপুল (৩০) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই যুবক উপজেলার মণ্ডতোষ ইউনিয়নের গজারমারা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে বিপুলের বাড়িতে অবস্থান নেন ওই তরুণী। পরে শুক্রবার সকালে বিপুলের বাড়ির লোকজন মেয়েটিকে মারধর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

বুলবুল উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের গজারমারা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় ওই তরুণী তিন দিন ধরে বুলবুলের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন করলে আজ শুক্রবার সকালে মারধর করে বের করে দেয় প্রেমিকের পরিবার। এর পর থেকে বিষয়টি থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সমাধানের জন্য চেষ্টা করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকের মাধ্যমে চার বছর আগে বুলবুলের সঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক বছর ধরে তাদের মোবাইলে কথাবার্তা ও ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেম চলতে থাকে। একপর্যায়ে বুলবুল মেয়েটিকে নিয়ে আটঘরিয়া উপজেলায় নিজের বড় বোনের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করেন। এরপর থেকে বুলবুল তাকে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে নিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকেন। ধর্ষণের কারণে মেয়েটি একপর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন। বুলবুলের চাপে পাঁচ মাসের গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেন। এ ঘটনার পর মেয়েটি বিয়ের দাবিতে গত মঙ্গলবার বুলবুলের বাড়িতে যান। এ সময় বুলবুল প্রেমিকাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তখন মন্ডুতোষ ইউপি চেয়ারম্যান আফসার আলী ওই বাড়িতে গিয়ে গ্রাম পুলিশ নিয়ে ওই যুবতীর নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিষয়টি আলোচনা করে সমাধানের উদ্যোগ নেন। তবে বুলবুলের পরিবারের অসহযোগিতার কারণে গত তিনদিনেও সমাধান হয়নি।

ওই তরুণীর অভিযোগ, ‘প্রেমের পর থেকেই বুলবুল আমাকে বিয়ে করবে বলে তার বোন ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দিত। এরপর একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ভিডিও ধারণ করে সে নিয়মিত আমাকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করত। এখন যদি সে আমাকে বিয়ে না করে তাহলে আমার মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ নেই।’

তরুণীকে মারধরের বিষয়ে বুলবুলের বাবা ইসমাইল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ছেলে বাড়িতে নাই। তাই স্থানীয়দের পরামর্শে ওই মেয়েকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিই। আমি কোনোভাবেই ওই মেয়েকে পুত্রবধূ মানব না।’

বিষয়টি নিয়ে মন্ডুতোষ ইউপি চেয়ারম্যান আফসার আলী গণমাধ্যমকে বলেন, মেয়েটিকে মারধর না করতে বুলবুলের পরিবারকে বলা হয়েছে এবং গ্রাম পুলিশ নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া বুলবুলকে দ্রুত বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়ের পরিবারকেও আসতে বলা হয়েছে। দুই পরিবার একসাথে হলে থানা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

এদিকে, এ বিষয়ে কথা বলতে পলাতক বিপুলের ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। শুনেছি বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখানের বিট কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।

অপরাধ সারাদেশ