ফেসবুক-ইউটিউবের প্রতিনিধিদের তলব করবে সংসদীয় কমিটি

ফেসবুক-ইউটিউবের প্রতিনিধিদের তলব করবে সংসদীয় কমিটি

ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) দায়বদ্ধতার বিষয়টি জানতে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আগামী বৈঠকে বা পরবর্তী যে কোনো বৈঠকে ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের তলব করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বুধবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে দুর্গাপূজার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে গুজব ছড়ানো হয় এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তখন একটি প্রশ্ন এসেছে যে পত্রিকায় যদি কোনো ভুল সংবাদ পরিবেশিত হয় বা অসত্য সংবাদ পরিবেশিত হলে সে ক্ষেত্রে সম্পাদক ও প্রকাশককে দায়ী করা হয়। দুইজনের বিরুদ্ধেই মামলা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যখন গুজব রটানো হয় বা অসত্য প্রকাশ করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হয়। সেটির দায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সার্ভিস প্রোভাইডারদের নিতে হবে, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সে জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এ বিষয়টি আলোচনা করা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কালকে সিদ্ধান্ত আকারে এটি এসেছে যে, এ কমিটির পরবর্তী বৈঠকে বা যে কোনো বৈঠকে নোটিশ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যমগুলোর যারা এখানে সার্ভিস প্রোভাইডার আছেন তাদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডাকা হবে। এবিষয়ে তাদের কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হবে।

বিটিআরসি অনুমোদনহীন সার্ভিস-প্রোভাইডারদের সার্ভিস বন্ধ করতে ডেটলাইন দিয়েছে। তার সঙ্গে কমিটির সিদ্ধান্ত এক করলে এর ব্যাপকতা কী হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অনুমতি ছাড়া যারা সার্ভিস প্রোভাইড করছে বিটিআরসি তাদের বন্ধ করতেই পারে। অনুমোদনহীন কেউ চালাবেন এটা উচিত নয়। সেটা আলাদা বিষয়, টেকনিক্যাল বিষয়। আর গতকালকেরটা হচ্ছে দায়বদ্ধতার বিষয়। দুইটা দুই জিনিস। সরকারের অনুমতি না থাকলে আপনি কীভাবে সার্ভিস দেবেন। তাই বিটিআরসি যে নোটিশ দিয়েছে সেটা যথাযথ দিয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, আর এখানে হচ্ছে দায়বদ্ধতার বিষয়। একটি পত্রিকায় পরিবেশিত হলে প্রকাশক তো নিউজগুলো দেখেন না। কোন নিউজ যাচ্ছে তা দেখা তার কাজ না। তারপরও প্রকাশকের বিরুদ্ধে মামলা হয়, আইনানুযায়ী রায়ও হয়। তাহলে আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সার্ভিস প্রোভাইডার, আপনাদের মাধ্যম ব্যবহার করে, আইডি হাইড করে দেশ ও বিদেশ থেকে গুজব রটায় এবং এর ফলে দেশে হানাহানি হয় এটির দায় তাদের নেই? অবশ্যই তাদের দায় আছে।

এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে আসবে কিনা বা সমালোচনা হবে কিনা?- জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেন নিয়ন্ত্রণ হবে, এটাতো নিয়ন্ত্রণের কোনো বিষয় না। এটাতো দায়বদ্ধতার বিষয়। কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে আইডি হাইড করে যা করা হয়, সে সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কি কিছুই করার নাই?

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, আইডি কার্ড দিয়ে যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম খোলার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। অথবা যাদের আইডি কার্ড নেই তাদের বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে যেন আইডি খুলতে পারে- এ ধরনের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তারা সেটি শোনে নাই। তাহলে তাদের দায় আছে না? অবশ্যই তাদের দায় আছে। সুতরাং তাদের দায়বদ্ধতার জায়গাটা স্বীকার করতে হবে।

সংসদীয় কমিটি সরকার নয়, একটি পার্লামেন্টারি কমিটি আইন প্রণয়ের সঙ্গে যুক্ত, তারা যে কাউকে ডাকতে পারে। বাংলাদেশ যে কাউকে তারা ডাকতে পারে তাদের সে ক্ষমতা আছে, যোগ করেন ড. হাছান মাহমুদ।

তথ্য প্রুযুক্তি