প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের  কম্পিউটার অপারেটর ও তার স্বামীর এত সম্পদ!

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কম্পিউটার অপারেটর ও তার স্বামীর এত সম্পদ!

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে স্বামীর নামে রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়ে জড়িয়ে পড়েন মানবপাচারে।

এভাবে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।
এই দম্পতি হলেন কম্পিউটার অপারেটর নূরজাহান আক্তার ও তার স্বামী এসএম আব্দুস সাত্তার। দুজনের বিরুদ্ধে প্রায় সাত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর পৃথক মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার পরই তারা হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। সেই জামিনের মেয়াদ শেষে গত সপ্তাহে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন নিম্ন আদালতে। ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

নূরজাহান দম্পতি প্রথম আলোচনায় আসেন ২০২০ সালে। ওই বছর ২৬ মে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মানবপাচার মামলায় দুজন গ্রেফতার হন। পরে হাইকোর্টের আদেশে তারা জামিনে মুক্তি পান।

জানা যায়, স্ত্রীর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের চাকুরির সুবাদে স্বামী আব্দুস সাত্তার বাগিয়ে নেন ‘এসএএম ইন্টারন্যাশনাল’ নামে রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স, যার আড়ালে চলে মানবপাচার। এভাবে এই দম্পতি গড়ে তোলেন মোটা অঙ্কের সম্পদ।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নূরজাহান ও তার স্বামী আব্দুস সাত্তারের নামে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারি। এর মধ্যে নূরজাহানের বিরুদ্ধে মোট তিন কোটি ৬৭ লাখ ২৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইন ২০০৪ এর ২৭(১) এবং মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় এই মামলা হয়। সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় তার একটি ফ্ল্যাট এবং দক্ষিণ বনশ্রীতে প্লটসহ রয়েছে বিভিন্ন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। যা ক্রয়ে অর্থের কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি।

অপরদিকে নূরজাহানের স্বামী আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে তিন কোটি ৩৬ লাখ ৩১ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) এবং মানি লন্ডারিং আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় এই মামলা হয়। তার দক্ষিণ বনশ্রীতে প্লটসহ বিভিন্ন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।

একজন কম্পিউটার অপারেটরের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। দুদক কৌসলী রফিকুল ইসলাম বেনু বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে এই দুই আসামি গত ৩ জানুয়ারি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চায়। দুদকের পক্ষ থেকে আমরা জামিনের বিরোধিতা করি। একজন সামান্য চাকরিজীবী হয়েও অবৈধভাবে বিপুল সম্পত্তি অর্জনের কথা আমরা আদালতকে বলেছি। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

অপরাধ