চাকরি স্থায়াীকরণের দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়েছে ছাত্রলীগ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তালা দিয়ে দুই ঘণ্টা প্রধান ফটক আটকে রাখেন তারা। এর আগে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পিএসকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ফলে মঙ্গলবার বিকেলে নির্ধারিত বাস ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারেনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে তালা খুলে দেয় ছাত্রলীগ।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে ১০৬ জন কর্মচারী কাজ করেন। তাদের বেশির ভাগই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। এসব কর্মচারীরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি করে আসছেন।
জানা গেছে, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫৪তম সিন্ডিকেট সভায় ২০১৮ সালে অনুমোদন হলেও পরবর্তী সময়ে নিয়োগ বাতিল হওয়া এক শিক্ষককে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে তার নিয়োগের প্রতিবাদ জানাতে ক্যাম্পাসে জড়ো হন কর্মচারীরা। তারা সিন্ডিকেটে দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিয়ে ২০১৮ সালের ওই শিক্ষকের নিয়োগ দেওয়ায় ক্ষোভ জানান ও তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানান।
প্রথমে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আতাউর রহমানের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে দাপ্তরিক কাজ বন্ধ করতে চাপ দেন। পরে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। উপাচার্য কার্যালয়ে না থাকায় ওই অফিসে কর্মরতদের বের করে দেন। এ সময় পিএস আইয়ুব আলীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অবরুদ্ধ করে রাখেন। দুই ঘণ্টা পর সহকারী প্রক্টর এসে উপাচার্যের পিএসকে কার্যালয় থেকে উদ্ধার করেন।
আন্দোলনের দীর্ঘ সময় পর ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন। বিকেল ৫টার দিকে প্রক্টরের আশ্বাসে তারা প্রধান ফটক থেকে সরে যায়।
অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান টিটো বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করে আসছি। কিন্তু আমাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের দাবি বিভিন্ন অফিসে যারা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করছে তাদের স্থায়ীভাবে চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ঘটনাগুলো দুঃখজনক। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রক্টরিয়াল বডি শুরু থেকেই সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা চালিয়েছে।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, এরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ না। এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে তাদের দৈনিক মজুরিতে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এখন তার আর দরকার নেই।