নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
মাদক পাচারে নতুন মাধ্যম হিসেবে স্কুল-কলেজপড়–য়া শিক্ষার্থীদের পাকস্থলী ব্যবহার করা হচ্ছে। সারাদেশে এমন ছয়টি টিম মাদক পাচারের কাজ করছে বলে জানা গেছে। ময়মনসিংহের এক মাদকের ডিলার এ চক্রের হোতা বলে জানা গেছে। তার মাধ্যমেই সারাদেশে শিক্ষার্থীদের এ কাজে ব্যবহার করা হয়। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ৯ ছাত্র বিশেষ কায়দায় পেটে করে ২৪ হাজার পিস ইয়াবা পাচারকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য নিশ্চিত হয় র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এসব তথ্য জানান।
তাদের কেউ স্কুল আবার কেউ কলেজের ছাত্র। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসযোগে ঢাকায় যাওয়ার পথে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী এলাকায় সোমবার রাতে র্যাবের টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেপ্তাররা হচ্ছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার চরপাড়াতলা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র তোফায়েল আহমেদ (১৯), দত্তের বাজার গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম রিফাত (২২), চরফরদী গ্রামের মাজহারুল ইসলামের ছেলে সদ্য এইচএসসি পাস আশিকুল ইসলাম (১৯), পটুয়াখালীর সদর থানার পশুরবুনিয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে দশম শ্রেণি পড়–য়া সোহেল (২১), নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার পিজাহাতি গ্রামের কামরুল হাসানের ছেলে ডিগ্রি পরীক্ষার্থী মিতুল হাসান মাহফুজ (২২), গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আমবাগ গ্রামের মৃত মাছুদ ইসলামের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সিয়াম ইসলাম (১৯), ময়মনসিংহের পাগলা থানার বাকশি গ্রামের ফখরুদ্দিন পাঠানের ছেলে ডিগ্রি পরীক্ষার্থী রিশাত পাঠান (২২), একই গ্রামের রতন মিয়ার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. সেলিম (২২) ও নয়াবাড়ি গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে ডিগ্রি পরীক্ষার্থী মো. গোলাপ (২২)।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, ৯ ছাত্রকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে তাদের পেটে ইয়াবা রয়েছে। পরে তাদের কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে নিয়ে এক্স-রে করা হলে প্রত্যেকের পেটে ইয়াবার অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের পেট থেকে বিশেষ কায়দায় ২৩ হাজার ৯৯০ পিস ইয়াবা বের করা হয়। এ ৯ মাদক পাচারকারীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় র্যাব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
আটককৃতরা র্যাবকে আরও জানান, গত ১ বছরে অনেকবার তারা এ প্রক্রিয়ায় টেকনাফ থেকে ঢাকায় ইয়াবা এনেছে। পারিবারিক দৈন্যদশা, বেকারত্ব ও মানসিক অবসাদের কারণে মাদককারবারিদের ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ফাঁদে পা দিতে হয়েছে বলেও জানান তারা।