নানা অভিযোগ এনে শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা মহিলা দলের নেত্রী নূর জাহান বেগম। তবে সংবাদ সম্মেলনের আধা ঘণ্টার মধ্যেই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে মো. হযরত আলীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন নূর জাহান বেগম।
নূর জাহান বেগম জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাবেক সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির (সদ্য ঘোষিত) এক নম্বর উপদেষ্টা।
কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত দলের প্যাডে তাকে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে। নূর জাহান সদ্য ঘোষিত জেলা কমিটির সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নূর জাহান বলেন, অর্থ দিতে পারি নাই বলে মহিলা দলের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতির পদ থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে অযোগ্য এবং দলের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই এমন মহিলাদের দিয়ে জেলা মহিলা দলের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, একই বাড়িব একাধিক নারীকে নতুন কমিটিতে রাখা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক আমার কাছে কমিটির বিনিময়ে টাকা চেয়েছেন। দিতে পারি নাই বলেই বাদ দেওয়া হয়েছে।
টাকার বিনিময়ে মনগড়াভাবে পকেট কমিটি দিয়েছেন শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী। দলে এক নেতা এক পদের আইন থাকলেও হযরত আলী জেলার সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতির মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। টাকা ছাড়া কোনো কমিটিতেই ওই নেতা স্বাক্ষর করেন না বলে জানান তিনি।
২৯ বছর ধরে মহিলা দল করা এই নেত্রী দাবি করেন, শেরপুর জেলা বিএনপি এখন ইনডোরে চলে গেছে। আউটডোর রাজনীতি এখানে নেই। দলের সকল কর্মকাণ্ড চলে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বাসার ইনডোরে। সকল কমিটি টাকার বিনিময়ে সেখান থেকেই সাজানো হয়ে থাকে। কেবল সাধারণ সম্পাদকের লোক হলেই কমিটিতে আসা যায়। এই সাধারণ সম্পাদকের কাছে ত্যাগী কর্মীদের কোনো মূল্য নেই। পদ বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এখানে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাতে প্রবাসীদের কাছ থেকে নেওয়া হয় টাকা। এই সাধারণ সম্পাদক জেলা বিএনপির সভাপতির কাছ থেকে নানা কায়দা করে স্বাক্ষর নিয়ে কমিটি পাশ করান।
তিনি অনতিবিলম্বে পকেট কমিটি বাতিল করে সৎ, যোগ্য ও দলের ত্যাগী নেত্রীদের কমিটিতে মূল্যায়নের দাবি জানান। সেই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদকের শাস্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষ করার কিছুক্ষণ পরেই ওই নেত্রীর বহিষ্কার সংক্রান্ত চিঠি সাংবাদিকদের কাছে পাঠান দলের সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী।
বহিষ্কারাদেশ নিয়ে নূর জাহান বেগম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শতবার বহিষ্কার করলেও আমি বিএনপির লোক থাকবো।
এদিকে, সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী বলেন, ওই নেত্রীর উপর আওয়ামী লীগ ভর করেছে। দল যখন আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন তিনি নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।
দলে কে টাকা খরচ করে আর কে কি করে শেরপুরবাসি জানে। এসবকে আওয়ামী লীগের ঈশারা উল্লেখ করেছেন দলের এই নেতা।
নূর জাহানকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদল হক রুবেল।