২২ ফেব্রুয়ারি থেকে সশরীরে পাঠদান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে কভিডের পূর্ণ ডোজের টিকা নেয়া শিক্ষার্থীরাই কেবল সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এক্ষেত্রে যারা দুই ডোজ টিকা পায়নি তাদের ক্লাস চলবে অনলাইনে বা টিভিতে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস চলবে বলেও জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা জানান ।
দীপু মনি বলেন, করোনার কারণে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান বন্ধ থাকবে। কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রেণিকক্ষে সশরীরে পাঠদান শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজে সশরীরে পাঠদান শুরু হবে।
তিনি বলেন, সশরীরে পাঠদানের ক্ষেত্রে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আমরা ক্লাসের সংখ্যা আগের মতোই কম রাখব। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি অনুযায়ী বাড়ানোর চেষ্টা করব।
মন্ত্রী বলেন, যেসব শিক্ষার্থী করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে, শুধুমাত্র তারাই সশরীরে ক্লাস করতে পারবে। এছাড়া অন্যরা অনলাইন বা টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস করবে।
তিনি আরও বলেন, মাধ্যমিক স্তরের ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ২২২ জন শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে। প্রথম ডোজ টিকা প্রায় সবাই পেয়ে গেছে। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৮ জন। আমরা আশা করছি, ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে পারব।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দীপু মনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা না থাকায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের এখনও টিকার আওতায় আনা যায়নি। তবে এরই মধ্যে ১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেখছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেলে তাদেরও টিকার আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, সংক্রমণ দ্রুত নিচের দিকে নামছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তাই আমরা আরো কিছুদিন অপেক্ষা করব। ২২ ফেব্রুয়ারি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ১০ দিন বা দুই সপ্তাহ পর আমরা প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।
গতকাল রাত ১০টার দিকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত কভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
করোনা সংক্রমণ ফের বেড়ে যাওয়ায় গত ১৩ জানুয়ারি থেকে ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। ২১ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ নতুন করে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপিরষদ বিভাগ। তাতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর আরো দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।