সীমা অতিক্রম করে ঋণ দিয়েছে সিটি ব্যাংক

সীমা অতিক্রম করে ঋণ দিয়েছে সিটি ব্যাংক

সিটি ব্যাংক লিমিটেডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত অগ্রিম প্রদানের সীমা ভেঙে ঋণ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন বিনিয়োগকারী গত অর্থবছরের প্রতিবেদনের বরাতে এই অভিযোগ তোলেন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে বলেও নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে আমার সংবাদের হাতে।

হুমায়ুন কবীর নামে ব্যাংকটির এক বিনিয়োগকারী জানান, ব্যাংকটির ২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদনের ব্যালেন্সশিট থেকে দেখা যায়, মোট ঋণ ও অগ্রিম দিয়েছে ২৬ হাজার ৮২০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু ব্যাংকের মোট মূলধন আছে দুই হাজার ৮৮১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ব্যাংক আইন অনুসারে মূলধনের এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত ঋণ প্রদানের সীমা আছে। কিন্তু তা মানেনি এই ব্যাংক।

তাছাড়া কোনো কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এই ঋণ দেয়া হয়েছে, সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য দেয়নি তারা। আইন লঙ্ঘন ও তথ্য গোপনের ফলে প্রতিষ্ঠানটি অনিয়মে জড়িয়েছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এমনিতেই করোনায় আমরা খুবই সংকটে রয়েছে। এরমধ্যে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি, এসব চাপ সামলাতে আমার মতো যারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী রয়েছে তারা মার্কেটের দিকে চেয়ে থাকে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটিরগুলো আমাদের কথা চিন্তা না করে পরিচালকদের হাতের পুতুল হয়ে আছে।

তাই নিয়ন্ত্রণ সংস্থা যদি মনিটরিং করা শুরু করে তাতে এই অনিয়মে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক আইন অনুসারে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপকে দেয়া সব ঋণের আসল অংকের মোট পরিমাণ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সময় নির্ধারিত ওই ব্যাংকের রক্ষিত মূলধনের অধিক হবে না।

তাছাড়া নির্ধারিত সীমা কোনো অবস্থাতেই শতকরা ২৫ ভাগের বেশি হবে না বলে আইনে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সে নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, সিটি ব্যাংকের মোট মূলধন দুই হাজার ৮৮১ কোটি টাকার সর্বোচ্চ ৭২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। কিন্তু ব্যাংকটি মোট ঋণ দিয়েছে ২৬ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। যা মোট ঋণ সীমার ৩৭ গুণের বেশি।

এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের কোম্পানি সচিব কাফি খানের কাছে জানতে চাইলে দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘একটি কোম্পানির মূলধনে অনেক ধরনের উপাদানের সমন্বয় থাকে। আমরা সব উপাদানের সমন্বয়ে মূলধন অনুযায়ী আইন ভঙ্গ করে ঋণ দেইনি।’ কিন্তু বার্ষিক প্রতিবেদনের পৃষ্ঠাসহ উল্লেখ করে এই বিষয়টি তুলে ধরলে তিনি দুইদিন পর অফিসে এসে বিষয়টি ক্লিয়ার হতে এই প্রতিবেদককে পরামর্শ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে নির্ধারিত দিনে তাকে ফোন করা হলে ব্যস্ততার কথা বলে প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।

অর্থ বাণিজ্য