করোনার বিরূপ প্রভাব শেষ না হতেই বিশ্ব দেখল ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে শিল্পের কাঁচামাল তথা সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ।
এদিকে, করোনা শেষ হয়েও হলো না শেষ। নতুন ভ্যারিয়েন্ট কোনো কোনো দেশে হানা দিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আসছে এপ্রিলের শেষ কিংবা মে মাসে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই যদি সত্যি হয়, তবে জনজীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা, চলমান যুদ্ধ আর করোনার কারণে এরই মধ্যে কর্মচাঞ্চল্যে ফিরে যাওয়া দেশগুলোর গতি শ্লথ হয়ে পড়বে। তাতে বেশি সংকটে পড়বে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলো। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা—আংকটাড এরই মধ্যে হুঁশিয়ার করে বলেছে, যে হারে পণ্য মূল্য বাড়ছে তাতে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বায়নের এ যুগে বাংলাদেশও আর বিচ্ছিন্ন নয়। সংগত কারণেই বাংলাদেশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। করোনার অভিঘাতে গত দুই বছর কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। লকডাউনে বন্ধ থাকা কলকারখানাগুলো এখনো পুরোদমে চালু করা যায়নি। কাঁচামালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে শিল্পমালিকরা ধরাশায়ী হচ্ছেন। অনেকেই ব্যাংক ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারছেন না। আবার সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকট তো রয়েছেই। বিদেশি জাহাজগুলো বাংলাদেশে আসতে অনাগ্রহী। জাহাজ ভাড়া তো বেড়েছেই। বাড়তি ভাড়া দিলেও বাংলাদেশি পণ্য বিদেশি বন্দরে ফেলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ফলে, ধরাশায়ী উদ্যোক্তারা। এরই মধ্যে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যদি নতুন ভ্যারিয়েন্ট সত্যিই ছড়িয়ে পড়ে তাহলে বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশগুলোর অর্থনৈতিক কাঠামো ঠিক রাখা সম্ভব হবে না। উপরন্তু চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার প্রভাবে এরই মধ্যে অস্থির তেলের বাজার। জ্বালানি সংকট হলে তো অর্থনীতির গতি থমকে যাবে—এটাই স্বাভাবিক।