নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেছেন, ‘আমি কোনো খারাপ, অসৎ ব্যবসায়ীদের প্রেসিডেন্ট হতে চাই না।’
শনিবার সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত রমজান মাস উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ীদের প্রেসিডেন্ট। আমি কোনো খারাপ, অসৎ ব্যবসায়ীদের প্রেসিডেন্ট হতে চাই না। আমি এই কথাটা সব সময় বলি। যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিনই বলব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী। আমরা ব্যবসা করব, লাভ করব—এটাই স্বাভাবিক। সরকারের পাশে থেকে আমরা চাই সাধারণ মানুষ যেন পণ্যটা ন্যায্য দামে পায়। কিন্তু আমাদেরকে ঢালাওভাবে অনেক কথা শুনতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি চেষ্টা করি সত্য বলার। অসাধু কিছু ব্যবসায়ী এখানে থাকতেই পারেন। আমি তাদের প্রেসিডেন্ট না। আপনারা (সাংবাদিক) তাদের চিহ্নিত করে দেন, আমরা ওই বিষয়ে কাজ করব’।
তিনি আরও বলেন, ‘গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর জন্য আমরা সবাই ব্লেম শুনব, সেটা হতে পারে না। আমি বলব না যে আমাদের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমস্যা নাই। সমস্যা থাকতেই পারে। আমি তাদের দায়িত্ব নিব না। আমরা তাদের শাস্তি দিতে চাই।’
দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে, সরবরাহও স্বাভাবিক। তাই রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে না বলে মত বিনিময় সভায় এফবিসিসিআই সভাপতিকে আশ্বস্ত করেছেন এসব পণ্যের উৎপাদক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ সদস্য বিশিষ্ট বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৪৬টি পণ্য সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কিনা তা তদারকি করবে কমিটির সদস্যরা।
তিনি জানান, এ ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার দর, সরবরাহ পরিস্থিতি, উৎপাদন, আন্তর্জাতিক বাজার দর সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং সরেজমিনে বাজার পরিদর্শন করবেন এই কমিটির সদস্যরা।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব আছে বলে মন্তব্য করেন সভাপতি।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে উৎসবকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমান। বাংলাদেশেও এমন সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে।
মত বিনিময় সভায় মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বশির উদ্দিন জানান, সরবরাহ ঠিক থাকলে বাজারে পণ্য মূল্য স্থিতিশীল থাকবে।
একই আশ্বাস দেন বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা।
বাংলাদেশ অয়েল মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিটিগ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা জানান, সেলস অর্ডারের ১৫ দিনের মধ্যে তেল সরবরাহ করতে হয়। তাই মিল মালিকদের তেল মজুদ করে রাখার কোনো সুযোগ নেই।
টিকে গ্রুপের পরিচালক সফিউল আথহার তাসলিম বলেন, গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর বাজার কারসাজির কারণে গোটা ব্যবসায়ী সমাজকে দায় নিতে হচ্ছে। তবে রমজানে বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই।
তিনি আরও বলেন, মিল মালিকদের কাছে পর্যাপ্ত তেল রয়েছে এবং বাজারেও কোনো সরবরাহ ঘাটতি হবে না।
সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান করেন।