নিজস্ব প্রতিবেদক
একটি দুটি নয়, প্রায় ২৫০০ ফেসবুক আইডি দিয়ে এক হ্যাকার অনলাইনে ফিশিং লিংক তৈরি করে তার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাক্তির ফেসবুকের আইডি পাসওয়ার্ড নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতো। নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর আইডির মেসেঞ্জারে থাকা বিভিন্ন ব্যাক্তিগত তথ্য, ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে ডাউনলোড করে রাখতো। পরবর্তীতে হ্যাকার টার্গেট ব্যাক্তিকে ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও এর কথা বলে টাকা দাবি করতো, কেউ দিতে না চাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিবে বলে হুমকি দিতো। এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই প্রতারক গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
গ্রেপ্তারের নাম মো. লিটন ইসলাম। এ সময় তার কাছ থেকে হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহৃত ১টি সিপিইউ, ২টি মোবাইল ফোন ও ১০টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তার দখলে থাকা প্রায় ২৫০০ দেশি-বিদেশি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এর লগইন করার প্রয়োজনীয় ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড এর তথ্য পাওয়া যায়।
সোমবার অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক জানান, গ্রেপ্তার হ্যাকার প্রথমে অনলাইনে ফিশিং লিংক তৈরি করে ছবি ও ভিডিও যুক্ত করে ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে। শেয়ার করা লিংকে ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার চেষ্টা করামাত্রই উক্ত পাসওয়ার্ড ও ইউজার নেম হ্যাকারের কাছে চলে যায়। পরে হ্যাকার উক্ত আইডির পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে দ্রুত তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণে নেয়া আইডির মেসেঞ্জারে থাকা বিভিন্ন ব্যাক্তিগত তথ্য ও ছবি/ভিডিও সংগ্রহ করে ডাউনলোড করে তা সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে হ্যাকার টার্গেট ব্যাক্তিকে মেসেঞ্জারে বার্তা প্রদান করে হ্যাকিংয়ের বিষয়ে অবগত করে টাকা দাবি করে। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তার ব্যক্তিগত ছবি/ভিডিও ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দিবে বলে হুমকি প্রদান করে।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নাজমুল হক বলেন, এ ধরনের এক ভিকটিম মো. আনোয়ার হোসেন এর অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ জানুয়ারি কদমতলী থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। মামলাটি তদন্তের সময় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হ্যাকারের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার এনায়েতপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার লিটনকে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এরকম প্রতারণা এড়াতে গোয়েন্দা-সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ কিছু পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হলো-
সাইবার স্পেসে অপরিচিত কোন আইডি থেকে প্রেরিত কোন লিংকে প্রবেশ না করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিত কোন আইডির সাথে বন্ধুত্ব না করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথাযথ সিকিউরিটি সেটিংস ব্যবহার করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন স্পর্শকাতর তথ্য, ছবি/ভিডিও শেয়ার না করা।