নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর ব্যস্ততম দুটি এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ২৩১ অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা লুট হয়েছে। গার্ডা শিল্ড নামে একটি সিকিউরিটি কোম্পানির ১১ কর্মীর মাধ্যমে এ অপরাধ সংগঠিত হয়। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তিকে গ্রেফ্তারের পর আজ বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের এ সংখ্যক এটিএম বুথ থেকে গত পাঁচ মাসে ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। অর্থ লুটের এসব ঘটনার পেছনে রয়েছে মানি লোডিংয়ের দায়িত্বে থাকা গার্ডা শিল্ড নামে সিকিউরিটি কোম্পানির ১১ কর্মী।
পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আদালতের নির্দেশে বুথ থেকে টাকা চুরির মামলাটি তদন্ত শুরু করলে এ ঘটনায় গার্ডা শিল্ডের আরো দুই কর্মীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। তাহমিদ উদ্দিন পাঠান এবং আব্দুর রহমান নামে ওই দুজনকে গ্রেফতারের পর গত ২২ এপ্রিল তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঢাকা মহানগরীর সেনপাড়া পর্বতা এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংক’র ২৮৫২ নম্বর এটিএম বুথসহ মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ২৩১টি বুথ থেকে গার্ডা শিল্ডের ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের দায়িত্বে থাকা তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ও আব্দুর রহমানসহ ১১ কর্মী ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়। ওই ১১ জনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দুজন করে একাধিক টিমে ভাগ হয়ে এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের ডিউটি করতো। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস ট্রানজেকশন করতো। এভাবে অক্টোবর ২০২১ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে চক্রটি উল্লিখিত অর্থ আত্মসাৎ করে।
বিষয়টি গোচরে আসলে গার্ডা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করে ডাচ-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পরে গার্ডা শিল্ড ঘটনার বিষয়ে যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান এবং আব্দুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কর্তৃক অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পায়। এরপর কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আব্দুল আলম বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত দুজনের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পিবিআইর এ কর্মকর্তা আরো বলেন, কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা বুথের টাকা চুরিতে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করেন। একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, মিষ্টার আলী, রবিউল হাসান, আব্দুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম এবং শিশির কুমার একই উদ্দেশ্যে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংক’র এটিএম বুথসমূহে টাকা লোড দিয়ে নিজে ও আত্মীয়দের নামে ইস্যুকৃত এটিএম কার্ড দিয়ে ফলস ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়ে নিতেন। এ ছাড়া বুথের পার্চবিনে (রিজেক্ট বক্স) পাওয়া টাকা লুট করে নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করতেন।