কর্মস্থলে ফেরার যাত্রা  দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের লঞ্চ-ফেরিতে উপচে পড়া ভীড়

কর্মস্থলে ফেরার যাত্রা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের লঞ্চ-ফেরিতে উপচে পড়া ভীড়

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

ঈদের ছুটিতে আনন্দ ভাগাভাগি শেষ; জীবিকার তাগিদে এবার রাজধানীতে ফেরার পালা। আজ শুক্রবার ভোর থেকে নিজ নিজ আবাস্থল থেকে ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটে দেখা গেছে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ঢল। ফলে ওই এলাকায় লেগেছে যানজট। ঘাট এলাকায় দেখা গেছে বিভিন্ন যানবাহনের দীর্ঘ লাইন।

সরেজমিনে গিয়ে বিকেল পর্যন্ত ঢাকামুখি মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। বাড়তি চাপে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকা জট লেগে যায়। ঘাট পারের অপেক্ষায় দুই সারিতে অন্তত ৭০০ ছোট-বড় যানবাহন আটকা পড়েছে।

জানা গেছে, ৭-৮ ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে ফেরি পারের আশায় যাত্রীদের অনেকেই পায়ে হেঁটে অথবা রিকশাযোগে ঘাটের দিকে রওনা হন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পরিবার নিয়ে গ্রামে ঈদ পালন করতে যাওয়া মানুষরা। অনেককেই দেখা গেছে বড় বড় ব্যাগ হাতে, কেউ কেউ প্রচণ্ড গরমে দুধের শিশু নিয়ে রোদের নিচে দাঁড়িয়ে আছেন।

ফেরি যাত্রী ও চালকদের অভিযোগ, ঘাটে কোনো নিয়মশৃঙ্খলা নেই। একেকবার একেক ঘাটে ফেরি আসার কথা শুনে তারা ছোটাছুটি করছেন। এমন অবস্থা প্রায় সকলের। অনেক ছোট ছোট বাহন, মোটরসাইকেলে ফেরি ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। অনেক যাত্রীরা হুড়মুড় করে ফেরিতে উঠে পড়ছেন, অন্যদের জন্য পা রাখার জায়গাও থাকে না। এদিকে, প্রচণ্ড গরমে তাদের হাঁসফাঁস অবস্থা।

একই অবস্থায় লঞ্চ ঘাটেও। জানা গেছে, এ নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর কোনোটিতে ১২৫ আবার কোনোটিতে ১৭৫ জন যাত্রী ধরে। কিন্তু নেয়া হচ্ছে তার দ্বিগুণ। শৃঙ্খলা রক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আদালত, রোভার স্কাউটস কাজ করছে। কিন্তু তাদের উপক্ষা করে যাত্রীরা যার যার মতো লঞ্চে উঠে যাচ্ছেন। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।

এ বিষয়ে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার মিলন মিয়া বলেন, যাত্রী পারাপারে পর্যাপ্ত লঞ্চ রাখা হয়েছে। তারপরও যাত্রীদের ভিড় সামলানো যাচ্ছে না। নিরাপত্তা রক্ষায় মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই যাত্রীদের বিশৃঙ্খলা থামান যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যাবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান  বলেন, এবারের ঈদে যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২১টি ফেরি প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। একটি ফেরি বিকল হয়ে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ভাসমান কারখানা মধুমতিতে মেরামতে রয়েছে। বাকি ২০টি ফেরি দিয়ে পারাপার করা হচ্ছে। যাত্রী দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ছোট প্রাইভেটকার ও বাসকে অগ্রাধীকার দেওয়া হচ্ছে। তারপরও যাত্রীদের ভিড় সামলানো সম্ভব হচ্ছে না। সহজে যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা চেষ্টা করছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সারাদেশ