যে কোনো শর্তে জামিন চাইলেন হাজী সেলিম

যে কোনো শর্তে জামিন চাইলেন হাজী সেলিম

রোববার (২২ মে) উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে এ আবেদন করেন হাজী সেলিমের আইনজীবী। হাজী সেলিমের হয়ে এসব আবেদন করার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবী প্রাণ নাথ।

হাজী সেলিমের আরেক আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হাজী সেলিম রোববার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করছেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করবেন তিনি।

আরো খবর
আজ আত্মসমর্পণ করবেন হাজী সেলিম
তিনি জানান, দুপুর ২টার দিকে হাজী সেলিম আত্মসমর্পণের জন্য আদালতে যাবেন।

জানা যায়, আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর জামিন বাতিল হলে হাজি সেলিমকে কারাগারে যেতে হবে। সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তিনি উন্নত চিকিৎসা এবং কারাগারে ডিভিশন চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।

আরো খবর
আইন মেনেই বিদেশ গেছেন হাজী সেলিম : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
যদিও উচ্চ আদালত বলে দিয়েছেন, রায় নিম্ন আদালতে পৌঁছার এক মাসের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আইনে এমন বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে, কারাগারে গিয়েই তিনি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন। এর আগে তিনি আপিল করার সুযোগ পাবেন না।

আবেদনে হাজী সেলিমের আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে হার্ট সার্জারির সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাকশক্তিহীন অবস্থায় রয়েছেন হাজী সেলিম। তিনি দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। জেলে থাকলে চিকিৎসার অভাবে ও বাকশক্তিহীনতার কারণে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ কারণে যেকোনো শর্তে তার জামিন আবেদন করছি। জামিন পেলে তিনি পলাতক হবেন না। তাই আপিল শর্তে আত্মসমর্পণপূর্বক তার জামিন আবেদন করছি।

আরো খবর
দণ্ড নিয়ে বিদেশ গিয়ে আবার ফিরলেন হাজী সেলিম
গত ২৫ এপ্রিল দুপুর ৩টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে হাইকোর্ট থেকে মামলার নথি এসে পৌঁছায়। এদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে রায়ের নথি পাঠানো হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, আইন অনুযায়ী আজ থেকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আর হাইকোর্টের রায়ের ফলে তার সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা নেই।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকার স্পেশাল জজ আদালত-৭ এর বিচারক তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। এরপর ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। পরে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাজী সেলিমকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

পরবর্তীকালে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন। শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায়টি বাতিল করে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এরপর ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেন হাইকোর্ট। সে আদেশ অনুসারে নথি আসার পর আপিল শুনানি করা হয়।

শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল বেঞ্চ। রায়ে হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখা হয়। ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রায়ের কপি আদালত থেকে নামে (রায় প্রকাশিত হয়)। পরে ৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করা হয়। আর রায়টি অফিসিয়ালি বিচারিক আদালতে কমিউনিকেট (পাঠানো) হয় ২৫ এপ্রিল। এরই মধ্যে গত ২৭ এপ্রিল থেকে কোর্ট বন্ধ হয়ে যায়। তবে হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে ২৫ এপ্রিল থেকে ৩০ দিন সময় পাবেন হাজী সেলিম।

জাতীয়