প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে সবসময় বেশি গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সচিবালয়ে প্রবেশ এখন ডিজিটাল সিস্টেমের দিকেই যাচ্ছে। এক নম্বর ও ৫ নম্বর গেটে ডিজিটাল কার্ড সিস্টেমে প্রবেশ ও বের হওয়ার ব্যবস্থা বিদ্যমান।
তবে মূল গেট ২ নম্বরে সেই পুরাতন অবস্থা বিদ্যমান। এ গেট দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নতুনভাবে ডিজিটাল পাশ ব্যবহার করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জুলাইয়ে পুরোপুরি ডিজিটাল সিস্টেমে সচিবালয়ে যাতায়াত শুরু হবে।
বর্তমানে সচিবালয়ের মূল প্রবেশ পথের স্ক্যানিং মেশিন পুরাতনেই ভরসা করছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। আগে দুটো সচল থাকলেও এখন একটা স্ক্যানিং মেশিন সচল আছে। চলতি বছর বড় পরিসরে ২ নম্বর গেটের অভ্যন্তরে স্ক্যানিং মেশিন চালু করা হলেও তা মাসখানেক সচল থাকার পর আবারো বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। এখন মূলত পুরাতন একটা স্ক্যানিং মেশিনেই কয়েক হাজার লোকের যাতায়াত কন্ট্রোল করা হয়ে থাকে। চারটি গেটে ভেহিক্যাল স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে।
তবে আপাতত দুটি গেট দিয়ে মোটরযান সচিবালয়ে প্রবেশ করে। এর মধ্যে এক নাম্বার গেট দিয়ে শুধু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যানবাহন সচিবালয়ের ভিতরে প্রবেশ করে। আর অন্যসব মোটরযান প্রবেশ করে তিন নম্বর গেট দিয়ে।
অভিযোগ আছে, বেশি দামে স্ক্যানিং মেশিন ক্রয় করা হলেও তার মান অতটা ভালো না হওয়ায় এক মাসের মধ্যেই ২ নম্বর গেটের স্ক্যানিং মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এখানে পুরাতন স্ক্যানিং মেশিন দিয়েই চলছে কার্যক্রম। এছাড়াও তিন নম্বর গেটে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ভেহিক্যাল স্ক্যানার মেশিনের সিকিউরিটি স্টিক বেশ কয়েকবার ভেঙে গেলেও আপাতত ভাঙা স্টিক দিয়েই চলছে কাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রশাসন-২ যোগাযোগ করলেও এ বিষয়ে কেউ তথ্য দিতে রাজি হননি। দেশের বড় পরিসরে সরকারি জনবল কাজ করে সচিবালয়ের ভিতরে। ৩৯টি মন্ত্রণালয়ের প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী এখানে কাজ করেন।
প্রশাসন পর্যায়ে দেশের আর কোথাও একসঙ্গে এতবড় জনবল একসঙ্গে কাজ করে না। সচিবালয়ের এ বিশাল জনবলের কর্মকালীন সময়ের নিরাপত্তা ও আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করে থাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
এ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সচিবালয়ে প্রবেশ সিস্টেম এখন পুরোপুরি ডিজিটাল সিস্টেমে করা হচ্ছে। প্রবেশে কড়াকড়ি ও বিশেষ নিরাপত্তা জোড়দার করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালু করছে জননিরাপত্তা বিভাগ।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সচিবালয় নিরাপত্তা শাখার (জননিরাপত্তা বিভাগ) এক কর্মকর্তা বলেন, আগামী দু-এক মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সচিবালয়ের সব স্টাফদের যাতায়াত কার্যক্রম চালু হবে।
তিনি বলেন, প্রায় আট হাজার ডিজিটাল পরিচয়পত্র এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। আর অল্প কিছু কার্ড বাকি আছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রতিদিনই আমরা ডিজিটাল কার্ড করে দিচ্ছি।
তিনি বলেন, এখন সব মন্ত্রণালয়ের পাশগুলো ডিজিটাল সিস্টেমে করা হয়েছে। এতে করে এখন আর গেটে টাকা দিয়ে সচিবালয়ে ঢোকার সুযোগ থাকছে না। এতে করে দালালদের দৌরাত্ম্য অনেকাংশে কমে যাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। ১৭ দশমিক ৫৩ একর জমিতে গড়ে উঠেছে দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কেন্দ্র। সচিবালয় একটি উচ্চ সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১১টি ভবন ও ছয়টি ক্যান্টিন রয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আগত সদস্য ও দর্শনার্থীসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন সচিবালয়ে যাতায়াত করে থাকেন। অপরদিকে চার থেকে ছয় হাজার যানবাহন সচিবালয়ে প্রবেশ করে