সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য ডিসিদের পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। বিএনপিকে বাদ দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা হলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
গতকাল রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেএম নূরুল হুদা। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন গত ১৪ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসা নূরুল হুদা।
তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাকালে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয় বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। নূরুল হুদা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্দেশ পালন করতেন বলেও অভিযোগ দলটির।
নূরুল হুদা বলেন, সিইসির দায়িত্ব পালনকালে তার ওপর ‘অদৃশ্য শক্তির’ চাপ ছিল না। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়াটা ছিল অস্বস্তিকর। রাজনৈতিক দল, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া শুধু নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বন্দুক ও লাঠি ব্যবহার করে নির্বাচন করা যায় নাÑমন্তব্য করে নূরুল হুদা বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর কোথাও নির্বাচনে বন্দুক ও লাঠির ব্যবহার হয় না। নির্বাচনকালে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করা ঠিক নয়। নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় সম্পদ নষ্ট ও মানুষ খুন কাম্য নয়।’
সাবেক এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইভিএম ব্যবহার করে কারচুপি করা যায় না। তারপরও ইভিএম মেশিনকে আরও আধুনিক করা যেতে পারে। বাংলাদেশে আগামী ২০ বছর নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা উচিত। বুথে সিসি ক্যামেরা থাকলে ইভিএমের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়বে বলে মনে করেন নূরুল হুদা।
নূরুল হুদা বলেন, একটা জায়গায় ইভিএমে ত্রæটি রয়েছে। ব্যালট ইউনিটকে টেকনোলজির আওতায় আনা যায়নি। এটা কমপ্লেক্সসিটির (জটিলতার) জন্য। এখানেও ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। হয়তো ভবিষ্যতে এটার ব্যবস্থা হতে পারে। তবে যদি পোলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং অফিসার ও প্রশাসন সতর্ক থাকে, তাহলে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। এছাড়া সব কেন্দ্রে যদি সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা যায় তাহলে হয়তো এ সমস্যা এড়ানো যাবে। এরকম চ্যালেঞ্জ আসবে, সেটি সমাধান করতে হবে বলে জানান তিনি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির ছায়া সংসদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।