নিজস্ব প্রতিবেদক
ডলারের বিপরীতে আবারো কমানো হয়েছে টাকার মান। গতকাল ডলারের দাম ১ টাকা ৬০ পয়সা বাড়িয়ে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা ধার্য করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ডলারের দাম ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। সে হিসাবে তিনদিনের ব্যবধানে ১ টাকা ৬০ পয়সা বেড়েছে ডলারের দাম।
সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হলো ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। ২০২১ সালের জুনে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে গতকাল প্রতি ডলার ৯১ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
বাজারে সংকট তীব্র হওয়ায় পুরো মে মাসেই অস্বাভাবিক দামে ডলার কিনতে থাকে ব্যাংকগুলো। এক্ষেত্রে ৯৬ টাকারও বেশি মূল্যে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছ থেকে রেমিট্যান্সের অর্থ কিনে নেয় কোনো কোনো ব্যাংক। আর খুচরা বাজারে (কার্ব মার্কেট) ডলারের দাম উঠে যায় ১০২-১০৪ টাকায়। এ অবস্থায় ডলারের বাজারে লাগাম টানতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ২৬ মে ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) নেতাদের সঙ্গে গভর্নর ফজলে কবির বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠক থেকেই অভিন্ন দামে ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এক্ষেত্রে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম বেঁধে দেয়া হয় ৮৯ টাকা। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দামে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছ থেকে রেমিট্যান্সের অর্থ কিনতে পারেনি কোনো ব্যাংক। আর রফতানিকারকরাও বেঁধে দেয়া দামে রফতানি আয় নগদায়ন করেননি। এ অবস্থায় গত সপ্তাহজুড়ে আমদানি দায় পরিশোধে ব্যাংকগুলোকে হিমশিম খেতে হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই ’২১-মার্চ ’২২) ৩ হাজার ৬৬১ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যেটি ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি। বিপরীতে চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে দেশে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। রেকর্ড এ আমদানি প্রবৃদ্ধি দেশের ২ হাজার ৪৯০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি করেছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ হতো। কিন্তু রফতানি আয়ের পাশাপাশি রেমিট্যান্স যুক্ত করেও আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।