নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণে যে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে, তা দিয়ে অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করা যেত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (১১ জুন) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার ২ হাজার ৩৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুমোদিত ঋণ বাদ দিয়ে সরকার কার স্বার্থে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করল? এই বিপুল অংকের টাকায় জনগণের স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা, অবকাঠামোসহ নানামুখী জনকল্যাণমূলক উন্নয়ন করা যেত।’
নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণে যে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে এবং হবে তা দিয়ে অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ সম্পাদন করা যেত’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের উচ্চমহলের সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকসহ সব দাতা সংস্থা পদ্মা সেতুতে তাদের অঙ্গীকারকৃত ২ হাজার ৩৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাতিল করে। দুর্নীতিবিষয়ক সব তথ্য ২০১১ সালে দুদকে পাঠানোর পরও বাংলাদেশ সরকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানু ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিশ্বব্যাংক তাদের প্রদত্ত নামমাত্র সুদের ১২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ বাতিল করতে বাধ্য হয়।’
‘পরবর্তী সময়ে অন্যান্য দাতা সংস্থাও ঋণচুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়। এর ফলে নামমাত্র সুদের বিদেশি অর্থের পরিবর্তে বড়াই করে নিজস্ব অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে প্রকৃত অর্থে এ দেশের জনগণকে ঠকানো হলো। কেননা এই অর্থ দিয়ে জনগণের কল্যাণে নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কার্যাদি সম্পাদন করা যেত, যা থেকে তারা বঞ্চিত হলো’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা গেলে দুর্নীতির কোনো সুযোগ থাকতো না। কেন না বিশ্বব্যাংকসহ উন্নয়ন সহযোগীরা সেতু ব্যয় কঠোরভাবে মনিটরিং করতো। বিশ্বব্যাংকসহ উন্নয়ন সহযোগীদের সহজ শর্তের ঋণ পরিহার করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে দুর্নীতির অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে দেশের জনগণের মনোজগতে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের আবেগময় আবহ সৃষ্টির প্রচেষ্টার আড়ালে মানুষের মন থেকে আওয়ামী লীগের ১৪ বছরের সব পাপ, দুর্নীতি, অন্যায় ও অপকর্মের ক্ষত মুছে ফেলার একটি মোক্ষম কৌশল হিসেবে নিয়েছে সরকার। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণ অতি সচেতন। প্রকৃত সত্য তাদের জানা আছে। জনগণকে বেকুব ভাবার কোনো সুযোগ নেই।’