মৌসুমী-সানীর দূরত্ব দেড় বছর ধরে!

মৌসুমী-সানীর দূরত্ব দেড় বছর ধরে!

চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে কেন্দ্র করে মৌসুমী-ওমর সানীর সংসারে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ওমর সানী ও তার ছেলে ফারদিনের সুস্পষ্ট অভিযোগ, জায়েদ তাদের পরিবারে অশান্তির কারণ। তিনি চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে দীর্ঘদিন ধরে ডিস্টার্ব করছেন।

ওমর সানী-মৌসুমীর দাম্পত্য জীবন ২৭ বছরের। সোমবার তাদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য তাদের সম্পর্কের মধ্যকার টানাপোড়েন সামনে চলে আসে।

জানা গেছে, এই তারকা দম্পতি রাজধানীর গুলশানের একটি বাসায় একই ছাদের নিচে বসবাস করলেও গত দেড় বছর ধরে তাদের মধ্যে এক ধরনের দূরত্ব রয়েছে।

দুই বছর আগেও জায়েদ-সানী সম্পর্ক ছিল ‘সাপে নেউলের’ মতো। গত বছরের ডিসেম্বরে শিল্পী সমিতির সর্বশেষ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলেছিল। একসঙ্গে সিনেমায় কাজও করেছেন। জায়েদ খানকে কেন্দ্র করে এবার পারিবারিক কলহে লিপ্ত হলেন মৌসুমী-ওমর সানী।

তাদের পরিবারের ঘনিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই দম্পতির সম্পর্কে যে বরফ জমেছে তা গলতে সময় লাগবে। মৌসুমী-সানীর
সন্তান ফারদিন ও ফাইজা বাবা-মায়ের দূরত্ব কমানোর চেষ্টা করছেন।

সূত্রগুলো বলছে, মৌসুমীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই খলঅভিনেতা ডিপজলের ছেলের বিয়েতে গিয়ে সানী জায়েদ খানকে চড় দেন। তিনি শিল্পী সমিতিতে গিয়ে তার নামে নালিশও করেছেন।

ওমর সানীর অভিযোগের পর দেশব্যাপী যখন সমালোচনার ঝড় বইছে ঠিক তখন মৌসুমী মুখ খুললেন। গতকাল সোমবার জানিয়েছেন, ওমর সানী আসলে মিথ্যা বলছেন! এক অডিও বার্তায় মৌসুমী বলেন, ‘আমি মনে করি আমার প্রসঙ্গটা টানার কোনো প্রয়োজন ছিল না। আমি জায়েদকে অনেক স্নেহ করি, সেও আমাকে যথেষ্ট সম্মান করে। আমাদের মধ্যে যতটুকু কাজের সম্পর্ক, সেটা খুবই ভালো একটা সম্পর্ক। সেখানে সে আমাকে অসম্মান করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। ওর মধ্যে ভালো গুণ ছাড়া এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে এমন কিছুই আমি দেখিনি। তারপর বলব, সে অনেক ভালো ছেলে। সে কখনোই আমাকে অসম্মান করেনি।’ ওমর সানীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনিও বলেন, ‘কেন এই প্রশ্নটা বারবার আসছে, সে (জায়েদ খান) আমাকে বিরক্ত করছে, উত্ত্যক্ত করছে! এই জিনিসটা আমার আসলে… জানি না এটা কেন হচ্ছে। এটা যদিও একান্ত আমাদের ব্যক্তিগত সমস্যা। সে সমস্যা আমাদের পারিবারিকভাবেই সমাধান করা দরকার ছিল।’

অডিও বার্তায় স্বামী ওমর সানীকে ভাই বলে সম্বোধন করে মৌসুমী বলেন, ‘আমি মনে করি, এখানে জায়েদের খুব একটা দোষ আমি পাইনি। আরেকটা কথা বলতে চাই, আমাকে ছোট করার মধ্যে আমাদের… যাকে আমরা অনেক শ্রদ্ধা করে আসছি সেই ওমর সানী ভাই কেন এত আনন্দ পাচ্ছেন-সেটা আমি বুঝতে পারছি না। আমার কোনো সমস্যা থাকলে অবশ্যই আমার সঙ্গে সমাধান করবে, সেটিই আমি আশা করি। তিনি (ওমর সানী) আসলে একতরফা বলেছেন, কিন্তু আমি বলেছি কিনা, আমি অভিযোগ করেছি কিনা; জানাটা খুব বেশি জরুরি ছিল।’

এদিকে মৌসুমীর অডিও বার্তা প্রকাশের পরপরই ওমর সানী ফেসবুক লাইভে এসে আবারও নিজের অভিযোগের পক্ষে অটল থাকেন। এজন্য ছেলে ফারদিন ও মেয়ে ফাইজাকে অভিভাবক মেনে সাক্ষী হিসাবে দাঁড় করানোর কথা বলেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি যা বলেছি স্পষ্ট করেই বলেছি। আমি শ্রদ্ধা রেখেই কথা বলতে চাই। আমার পরিবারের প্রতি, মৌসুমীর প্রতি আমার প্রচণ্ড শ্রদ্ধা আছে। আমার ছেলেমেয়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। সে (মৌসুমী) যা বলেছে, কী ভেবে বলেছে আই ডোন্ট নো। এ বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন ধরে একটু দূরত্ব তো চলছিল। আমি তার ব্যাপারে মন্দ কথা, খারাপ কথা কিছুই বলব না। কারণ সে এখনো আমার স্ত্রী। আমার সন্তানের মা। একটা কথা বলতে চাই, আমি কী বলেছি না বলেছি সম্পূর্ণ আমার ছেলে ফারদিন, আমার মেয়ে ফাইজা জানে। আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ প্রমাণ আছে জায়েদ খান যে মৌসুমীকে ডিস্টার্ব করেছে। ফারদিন বলুক আর ফাইজা বলুক তাদের মায়ের সম্পর্কে। আমার ছেলেমেয়েরা কথা বলুক এ বিষয়গুলো নিয়ে। তারা যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে। আমি কিছু বলতে চাই না।’

চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের অভিমত-ওমর সানী-মৌসুমীর আলাদা আলাদা বক্তব্যে এটা প্রতীয়মান হয় যে, তাদের সংসারে অশান্তির হাওয়া বইছে।

বিনোদন