দেশের ১৭টি জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

দেশের ১৭টি জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

ভারতের মেঘালয় ও আসামে ক্রমাগত বৃষ্টি হওয়ায় তা বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে। দুই দিনের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চল ও দেশের মধ্যাঞ্চলের আরও ১৭টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।

এরমধ্যেই সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত বৃহস্পতিবার ৯৭২ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১২২ বছরের মধ্যে রেকর্ড। খবর বিবিসির।

দেশের ১৭টি জেলা বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ সেসব এলাকায় বন্যার তীব্রতা বাড়ছে, নদীগুলোর পানি আরও বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। সারাদেশের ১০৯টি নদী পর্যবেক্ষণ করছে এই দপ্তর। তার মধ্যে ৯৫টি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলছেন, সিলেট, সুনাগমঞ্জ এলাকায় শনিবার এবং আগামীকালও বৃষ্টি হবে। ফলে সেসব এলাকার বন্যার পানি আরও বাড়তে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। সেইসঙ্গে যমুনা নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে।

এরফলে উত্তরাঞ্চলের আরও কিছু জেলা প্লাবিত হতে পারে। বন্যার এই পানিটা আবার নীচের দিকে নেমে এলে মধ্যাঞ্চলের কিছু জেলাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। সড়ক ডুবে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে আগেই সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। মোহনগঞ্জে রেলব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ায় নেত্রকোনার সঙ্গেও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তা দেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে প্রবেশে করে আরও এগিয়ে আসছে। এরফলে জামালপুর, বগুড়া, শেরপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারি ও পাবনায় বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এছাড়া নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভিবাজারে বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। বন্যার পানি আরও নীচের দিকে নেমে এলে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুর ইত্যাদি এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে আরও ৫৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। গত তিনদিনে এখানে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আসামে বৃষ্টি হতে পারে অন্তত ৩০০ মিলিমিটার। এসব এলাকার বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সিলেট ও কুড়িগ্রাম দিয়ে নেমে আসবে। মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির আশা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা।

সিলেট, কানাইঘাট, সুনামগঞ্জ ও দিরাইয়ে সুরমা নদী, কুড়িগ্রামে ধরলা, চিলমারিতে ব্রহ্মপুত্র, লরেরগড়ে জাদুকাটা, কলমাকান্দায় সোমেশ্বরী নদীর পানি, নাকুয়াগাঁওয়ে ভোগাই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা নদীর পানিও বাড়ছে।

জাতীয়