বজ্রপাতে ১১ জেলায় শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৯ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে ৬, সিরাজগঞ্জে ৩, রাজশাহীতে ২ জন মারা গেছেন। এছাড়া নওগাঁ, বগুড়া, জামালপুর, ঢাকা, নাটোর, চুয়াডাঙ্গা, গাজীপুর ও দিনাজপুর জেলায় একজন করে মারা গেছেন। শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে দ্রুত মাঠে মাঠে বজ্র নিরোধক টাওয়ার নির্মাণের দাবি জানান বজ্রপাত সচেতনতায় কাজ করা সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএএফ)।
বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে হলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আর এজন্য বজ্রপাত সচেতনতা বিষয়টি পাঠ্য পুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মাঠে মাঠে বজ্রনিরোধক টাওয়ার নির্মাণ করতে হবে। তিনি বলেন, মারা যাওয়া ১৯ জনের পরিসংখ্যান দেখলে বুঝা যায়, একই পরিবারের তিন শিশু ফুটবল খেলতে গিয়ে, এক শিশু মাছ মারতে গিয়ে ও এক কিশোর মাঠে গরু চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যায়। আমাদের দেশে বৃষ্টি হলেই শিশু-কিশোর ফুটবল নিয়ে মাঠে খেলতে বের হয়। কিন্তু তারা ও তাদের পরিবার জানে না আকাশে কালো মেঘ দেখা দিলে ও বৃষ্টির সময় বজ্রপাত বেশি হয়। এজন্য সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
সংগঠনের সভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, বজ্রপাত রোধে সারাদেশে গাছ রোপণ করতে হবে।
গাছ বজ্রপাত থেকে মানুষকে নিরাপদ রাখে। আর হাওড় অঞ্চলে যেহেতু বজ্রপাত বেশি হয় সেখানে প্রচুর ছাউনি নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া বজ্রপাত নিয়ে মানুষের মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা দরকার বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, মারা যাওয়া ১৯ জনের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এদের মধ্যে ৮ জন শিশু-কিশোর এবং ৪ জন কৃষক। এদের মধ্যে তিন শিশু-কিশোর ফুটবল খেলতে গিয়ে, ১ জন মাঠে গরু চড়াতে গিয়ে এবং মাছ ধরতে গিয়ে ২ জন মারা গেছে।
ময়মনসিংহে একই পরিবারের ৩ শিশুসহ ৬ জন মারা গেছে। নিহতরা শিশুরা হলো- উপজেলার কংকরহাটি গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে সাঈদ মিয়া (১২), হাদিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১১), বিল্লাল হোসেনের ছেলে মো. শাওন (৮)। একই জেলার সদর উপজেলার দড়িকুষ্টিয়া বাল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক আবু বকর (৪০), জাহাঙ্গীর আলম (৩০)। নান্দাইল এবং ধোবাউড়া উপজেলার চরমুহিনী গ্রামের আবু সাঈদ (৩০)।
এছাড়া, সিরাজগঞ্জে পৃথক দুটি বজ্রপাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর সিকিউরিটি গার্ডসহ তিন’জন মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- উপজেলার সায়দাবাদ ইউনিয়নের সায়দাবাদ শিল্পপার্ক এলাকায় জাহাঙ্গীর আলম খানের ছেলে নাসির উদ্দিন (১৭) মারা যান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যমুনার চরাঞ্চলের বর্ণি এলাকায় দরবেশ আলী মুন্সীর ছেলে আবদুর রাজ্জাক মুন্সী মারা যান। এছাড়া দূর্গা চরন (৫২) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।