আর মাত্র কিছুদিন পরই কাতারের মাটিতে বসতে চলেছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’ ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। সারাবিশ্বের ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে অতি আকাঙ্ক্ষিত এই টুর্নামেন্ট যেন বিশ্বজুড়ে এক উৎসবের আবহ এনে দেয়। সারবিশ্বের ফুটবলপ্রেমী দর্শকদের মিলনমেলায় পরিণত হয় আয়োজক ভেন্যুগুলোর শহর।
ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দ উৎসবের অনুষঙ্গ হিসেবে থাকে রাতভর উদ্দাম পার্টি। সেসব পার্টিতে উদ্দাম জীবন উদযাপন করে থাকেন দেশ-বিদেশের দর্শকরা। সেসব পার্টিতে আবার ইউরোপ-আমেরিকার নারী-পুরুষ ফুটবল প্রেমীরা অবাধ মেলামেশাও করে থাকেন। তবে এবার সেসব ফুটবল প্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদই দিলো কাতার প্রশাসন।
কাতারে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আইনসিদ্ধ নয়। ফলে আসন্ন বিশ্বকাপে এমন কিছুর দেখা মিলবে না। যদি আইন ভেঙে কোনো পর্যটক এমন কিছু করেনও সেক্ষেত্রে তার পরিণতিও হবে বেশ খারাপ।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির পুলিশ ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে কেউ যদি বিবাহ-বহিভূর্ত সম্পর্কে জড়ায় তাহলে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে সাত বছরের জেল পর্যন্ত দেওয়া হবে। এছাড়াও অ্যালকোহল পার্টির ব্যাপারেও সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারের কাছে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘যদি স্বামী-স্ত্রী হিসেবে না আসা হয়, তাহলে শারীরিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ। এবার বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড (টাকার বিনিময় যৌন সম্পর্ক) একদমই করা যাবে না।’
সূত্র অনুযায়ী আরও জানা যায়, ‘এবারের বিশ্বকাপে তেমন পার্টিও করা যাবে না। সবাইকে এ বিষয়টি নিজেদের মাথায় রাখতে হবে। অন্যথায় নিজেদের জেলে দেখার প্রস্তুতিও নিতে হবে। এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো আবশ্যিকভাবে যৌন মিলন নিষিদ্ধ করা হবে। দর্শকদেরকে এসবের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
এদিকে শুধু বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কই নয়। সমকামিতাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবারের আসরে উপলক্ষ্যে। কাতার ফুটবল সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মানসুর আল আনসারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কাতার খুব রক্ষণশীল দেশ। এখানে অনেক কিছুই সম্ভব নয়। সমকামিতা নিয়ে আপনি আপনার মতাদর্শ যদি প্রকাশ করতে চান, তাহলে সেটা এমন জায়গায় দেখান, যেখানে এটা আইনসিদ্ধ।’
এর গত দুই বিশ্বকাপের আসরেও ব্রাজিল আর রাশিয়ায় ফুটবলপ্রেমীদের পাশাপাশি লক্ষাধিক যৌনকর্মীও ছিলেন দেশদুটোর পথে -প্রান্তরে, ভেন্যুর আশেপাশে। তবে এবার বিশ্বকাপের আগে কাতারের এমন ঘোষণার পর বলাই যায় আসন্ন বিশ্বকাপে উদ্দাম বিনোদনের এই ব্যবস্থাগুলোর কোনো সুযোগই থাকছে না।