যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পথে নৌকাডুবি, ১৭ হাইতিয়ান শরণার্থী নিহত

যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার পথে নৌকাডুবি, ১৭ হাইতিয়ান শরণার্থী নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হওয়ার জন্য সাগর পাড়ি দিয়ে ফ্লোরিডার মায়ামিতে প্রবেশের সময় নৌকাডুবিতে অন্তত ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। নিহতরা সবাই হাইতির নাগরিক। এ ঘটনায় আরও ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় রোববার মধ্যরাতে সাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে বাহামাসের উপকূলে নৌকাটি ডুবে যায়। আর এতেই ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বাহামা উপকূলে একটি নৌকা ডুবে হাইতির অন্তত ১৭ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ক্যারিবীয় এই দেশটির সরকার।

বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ ডেভিস বলেন, নৌকায় থাকা ব্যক্তিরা হাইতি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামিতে যাচ্ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাহামাসের পুলিশ জানিয়েছে, নিউ প্রভিডেন্স দ্বীপ থেকে ১১ কিলোমিটার (৬.৮ মাইল) দূরে নৌকাটি ডুবে গেছে। এ ঘটনায় অন্তত একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে এবং তার খোঁজে অনুসন্ধান অভিযান চলছে।

এদিকে এই ঘটনার পর দুজনকে আটক করা হয়েছে। আটক দুজনই বাহামার বাসিন্দা। সন্দেহভাজন মানব পাচার কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মূলত হাইতিতে অপরাধী চক্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত সহিংসতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় দারিদ্র্যের মধ্যে বিপজ্জনক ভাবে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করা লোকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ডুবে যাওয়া নৌকাটি প্রায় ৬০ জন আরোহী নিয়ে স্থানীয় সময় রোববার রাত ১টায় বাহামিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে জনবহুল দ্বীপ নিউ প্রভিডেন্স থেকে রওনা করে।

অভিবাসন মন্ত্রী কিথ বেল বলেছেন, নৌকাডুবিতে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বিপজ্জনক এই সমুদ্রযাত্রার জন্য (মানব পাচারকারীদের) তারা তিন হাজার থেকে ৮ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান করেছেন।

বাহামাসের পুলিশ কমিশনার ক্লেটন ফার্নান্ডার বলেছেন, পুলিশ ‘নৌকার হুলে ঠকঠক করার শব্দ’ শোনার পর একজন নারীকে জীবিত উদ্ধার করেছে। ডুবুরিরা শেষ পর্যন্ত নিচে নেমে যায় এবং সেখান থেকেই তারা ১৭ লাশ উদ্ধার করে। এর আগেও একই পন্থায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকালে একই স্থানে প্রচুর মানুষ নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন।

গত মে মাসে পুয়ের্তো রিকোর কাছে নৌকাডুবিতে কমপক্ষে ১১ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। সেই ঘটনায় নিহতদের বেশিরভাগই ছিল হাইতির নাগরিক।

২০১০ সালে হাইতিতে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। নিরাপত্তাহীনতা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে দেশটি পুনর্গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা

আন্তর্জাতিক