আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম দফায় বাংলাদেশ দেড় বিলিয়ন ডলার ঋণ চায় বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বরাতে জানিয়েছে ফিনানশিয়াল টাইমস।
লন্ডনভিত্তিক এই পত্রিকাকে এক সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলা এবং বাজেট ঘাটতি পূরণে সব মিলিয়ে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চায় সরকার। তবে অর্থের ওই পরিমাণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি, সেজন্য আলোচনা চলছে।
এর বাইরে বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ আরও ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে চায় এবং সরকার এ বিষয়ে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কার পর রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের জেরে খাবার ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজার এখন টালমাটাল। সঙ্কট সামাল দিতে অনেক দেশই আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার চেষ্টায় আছে।
শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানও আইএমএফের কাছে জরুরি তহবিল চেয়েছে। পাকিস্তান তাদের চলমান ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির পাশাপাশি আরও ১.৩ বিলিয়ন ডলার ধার করার বিষয়ে প্রাথমিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে। শ্রীলঙ্কা এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ কমাতে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ায় দেশজুড় ফিরে এসেছে বিদ্যুতের লোড শেডিং। জ্বালানি তেলের দাম এক ধাক্কায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
ফিনানশিয়াল টাইমসকে মুস্তফা কামাল বলেন, “সবাইকে এখন ভুগতে হচ্ছে, আমরাও চাপের মধ্যে আছি।”
তবে শ্রীলঙ্কার মত ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি বাংলাদেশের নেই মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, “ওই রকম পরিস্থিতি হবে, সেটা ভাবারও কোনো কারণ নেই।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, যেসব প্রকল্প ওই ঋণে নেওয়া হয়েছে, তার অনেকগুলো থেকেই প্রত্যাশা অনুযায়ী অর্থ উঠে আসছে না। তাতে ঊর্ধমুখী মূ্ল্যস্ফীতি আর অর্থনীতির স্লথগতির এই সময়ে উদীয়মান দেশগুলো আরও বেশি আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।
তার মতে, কোনো দেশকে যাতে শ্রীলঙ্কার মত পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেজন্য অর্থায়নের আগে চীনের আরও ভালোভাবে প্রকল্প মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।