চা শ্রমিকদের দাবি আদায়ে ধর্মঘট অব্যাহত

চা শ্রমিকদের দাবি আদায়ে ধর্মঘট অব্যাহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ

ধর্মঘটের অংশ হিসেবে বাগানে বাগানে কর্মবিরতি পালন করছে চা শ্রমিকরা। ধর্মঘট ও সমাবেশের পর শনিবার বিকেলে শ্রমিকরা ফিরেন নিজ নিজ বাগানে। সেই ধারাবাহিকতায় রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় শ্রমিকরা নিজ নিজ বাগানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। একইভাবে সোমবার শ্রমিকরা কর্মসূচি পালন করবেন। তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি দাবি মানা না হয় তবে মঙ্গলবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করা হবে।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি মানতে হবে। অন্যথায় আমরা মঙ্গলবার থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করবো। সে পর্যন্ত আমাদের কাজ বন্ধ থাকবে। কোনো শ্রমিক কাজে যোগ দেবেন না। বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মানববন্ধন চলবে।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন জেলার ৪১টি চা বাগানের শ্রমিকরা। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে এ টাকা অত্যন্ত অপ্রতুল। তাই মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত তারা দৈনিক দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন। কিন্তু এতে কোনো সমাধান না হওয়ায় শনিবার থেকে টানা ধর্মঘটের ডাক দেন তারা।

 

চা বাগান সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩.২৪ হেক্টর জমিতে ২৫টি ফ্যাক্টরিযুক্ত চা বাগান রয়েছে। এ ছাড়া ফাঁড়িসহ প্রায় ৪১টি বাগানের প্রায় প্রতি হেক্টর জমিতে ২২-২৫ শ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়। এসব বাগানে বছরে ১ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়ে থাকে। বাংলাদেশ চা বোর্ড ও চা-শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সবমিলিয়ে ২৫৬ টি চা-বাগান আছে। এতে নিবন্ধিত শ্রমিকের সংখ্যা ১ লাখ ৩ হাজারের উপরে। অস্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ৩০ হাজার। দেশে মোট চা শ্রমিক পরিবারের বাসিন্দা প্রায় ৮ লাখ। এরমধ্যে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার। বাগানে কাজ না পেয়ে হাজার হাজার শ্রমিক বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

সারাদেশ