ক্ষমতার দাপট না দেখিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের কথাবার্তায় সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, আমাদের নেতাকর্মীদের বলবো, প্রত্যেককে কথাবার্তায়, আচার আচরণে দায়িত্বশীল হতে হবে। এই সময়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন কোনো কথা বলা সমীচীন নয়, এ সময় ক্ষমতার দাপট দেখানো সমীচীন নয়। ঠাণ্ডা মাথায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে, এটাই আজকে আমাদের সবচেয়ে বড় মেসেজ। গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহিলা শ্রমিক লীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশে জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক সংকট প্রভাব রেখেছে, তা জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বানও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব সংকটে, একটা নেতিবাচক প্রভাব আজকে বাংলাদেশ মোকাবিলা করছে। আমরা জানি, অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কস্ট অব লিভিং যেভাবে বেড়ে গেছে, মানুষ কষ্ট করছে- এটা ঠিক।
কিন্তু আমাদের সামনে কোনো উপায় ছিল না।
এ সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পরিবেশগত সমস্যার কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য আজকে রাইন নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, সেখানে জাহাজ চলতে পারছে না। ইতালির ১৫ লেকের অধিকাংশ শুকিয়ে গেছে। ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এখনো আগুন জ্বলছে। আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, আমাদের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের কথা বাদ দিয়ে কেউ তো আজ আরামে নেই। বাংলাদেশের জনগণের কষ্ট হচ্ছে। চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। শেখ হাসিনার আজকে ঘুম নেই, আন্তরিকভাবে তিনি আপনাদের এই সংকট উত্তরণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিএনপি’র সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর বহু দেশ আজকে সমস্যায় জর্জরিত। আর এটাকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের বিরোধী দল সরকার উৎখাতে নামেনি, আমেরিকার বিরোধী দল সরকার উৎখাতে নামেনি। এই দুনিয়ায় সংকটে অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, আর বাংলাদেশে তারা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি’র উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগুন নিয়ে আসবেন না, বলে দিচ্ছি, সতর্ক করে দিচ্ছি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আপনাদের কেউ বাধা দিচ্ছে না।
কিন্তু আগুন সন্ত্রাস নিয়ে যদি নামতে চান, মোকাবিলা করতে চান, তাহলে বলবো, সমুচিত জবাব দেয়া হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাকে প্রাইম টার্গেট করে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, এরপরও যিনি কোকোর মৃত্যুর পর বেগম জিয়ার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন। শোকাহত মাকে সান্ত্বনা দিতে। তার পরেও ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের দরজা বন্ধ শেখ হাসিনার মুখের উপরে। তাহলে প্রতিপক্ষের মতো আচরণ আমরা করতে চেয়েছি? গণভবনে সংলাপ করেছি। কিন্তু তারা আমাদের শত্রুই ভেবেছে। শত্রুতাই করেছে বার বার, তারা শত্রুতা করছে। মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সুরাইয়া আক্তারের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার সাথী, কার্যকরী সভাপতি সামসুন্নাহার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।