এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ১৫তম আসরের সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচে আজ রবিবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। এ দুই দেশের লড়াইটা বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাকর হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছে। এই মর্যাদার লড়াইয়ে জিততে মুখিয়ে থাকে দু’দলই। তাই প্রতিবারই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে থাকে বাড়তি উন্মাদনা।
এবারো এর ব্যতিক্রম নয়। টুর্নামেন্টে এ’ গ্রুপে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান।
দুই দলের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আবেদন যেন আরও বেড়েছে। বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এশিয়া কাপের মতো আসরে তাই ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচ মানেই গোটা ক্রিকেট বিশ্বে বাড়তি রোমাঞ্চ।
দুই দলের এবারের লড়াই দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই ভেন্যুতে ব্যাটার ও বোলারদের ভারসাম্য থাকে প্রতিটি ম্যাচেই। বাউন্ডারি ছোট বলে ব্যাটাররা দ্রুত রান তোলার কথা ভাববেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে ছেড়ে কথা বলবেন না বোলাররাও।
তবে ভারত-পাকিস্তান লড়াইকে শুধুমাত্র একটি ‘ম্যাচ’ বলেই মনে করেন দুই দলের বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটাররা। তাদের মতে, এটি অন্যান্য ম্যাচের মতই। তবে চাপ অনুভব করেন দলে থাকা ক্রিকেটাররা। বাড়তি চাপ থাকায়, মর্যাদার লড়াইয়ে জিততে মরিয়া ভারত ও পাকিস্তান। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, সকলেই এই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকে। খুব চাপের ম্যাচ এটি, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে দলের পরিবেশ হালকা পরিবেশ রাখতে চাই। এই ম্যাচ নিয়ে খুব ভেবে নিজেদের চাপে ফেলতে চাই না। যারা কোনো দিন পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেনি বা মাত্র একটি-দুটি ম্যাচে খেলেছে, তাদের ভালো করে এই ম্যাচের গুরুত্ব বোঝাতে চাই। আমরা পাকিস্তানকে অন্য যে কোনো সাধারণ বিপক্ষের মতোই দেখছি। তবে ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়ার লক্ষ্য আমাদের।
করে এই ম্যাচের গুরুত্ব বোঝাতে চাই। আমরা পাকিস্তানকে অন্য যে কোনো সাধারণ বিপক্ষের মতোই দেখছি। তবে ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়ার লক্ষ্য আমাদের।
রোহিতের সুরে কথা বলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমও। তিনি বলেন, অন্যান্য ম্যাচের মত হলেও, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে বাড়তি চাপ এমনতিতেই চলে আসে। এই চাপকে সামলেই লড়াই করতে হয় ক্রিকেটারদের। কারণ সকলেই জানে, এমন ম্যাচের গুরুত্ব কত বেশি। তাই জয়ের জন্য মুখিয়ে থাকে ক্রিকেটাররা। এবারো আমরা জয়ের জন্য মাঠে নামবো।
এদিকে, দুই ক্রিকেট পরাশক্তির টি-২০ ম্যাচ নিয়ে উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে দুবাইসহ গোটা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। এই ম্যাচ দিয়ে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মিশন শুরু হবে রোহিত শর্মার ভারত ও বাবর আজমের পাকিস্তানের। দুবাইয়ে দুই দল সর্বশেষ টি-২০ ম্যাচ খেলেছিল গত অক্টোবরে। টি-২০ বিশ্বকাপের ওই ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটের আকাশসমান ব্যবধানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচে শাহীন শাহ আফ্রিদির বিধ্বংসী বোলিংয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫১ রান করেছিল ভারত। মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৭৯ ও বাবরের ৬৩ রানে ভর করে পাকিস্তান ম্যাচটি জিতেছিল ১৩ বল হাতে রেখে।
অবশ্য দুই দেশের পরিসংখ্যানের বিচারে এগিয়ে রোহিত শর্মার ভারত। ৯ ম্যাচের ৬টিতে জিতেছেন রোহিতরা এবং বাবরের পাকিস্তানের জয় ২টি। ২০০৭ সালে প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপে দুই দল প্রথম খেলেছিল টি-২০ ম্যাচ। ‘টাই’ ম্যাচটি ‘বোল আউট’ পদ্ধতিতে জিতেছিল ভারত। এশিয়া কাপে দুই দল একবার খেলেছে পরস্পরের বিপক্ষে। ২০১৬ সালে মিরপুর স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ভারত জিতেছিল ৫ উইকেটে।
অন্যদিকে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকে আড়াল করে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন কোহলি। ছন্দহীন ভারতীয় ড্যাসিং ক্রিকেটার যেন রানে ফিরেন ক্রিকেটপ্রেমীদের মতো পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও চাইছেন। আফ্রিদি করমর্দন শেষে বলেন, ‘আপনি আবার রানে ফিরুন। এটাই প্রার্থনা করছি। ’ পাকিস্তানের লেগ স্পিনার শাদাব খান বলেন, ‘বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি করুন। তবে নিশ্চিত করে সেটা আমাদের বিপক্ষে নয়। অন্য দলের বিপক্ষে।
আদিকে, আজ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে যদি আজ নামেন ভারতীয় সাবেক এই অধিনায়ক, তাহলে নতুন একটি মাইলফলক গড়বেন। অধিনায়ক রোহিতের পর দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি-২০ ক্রিকেটে ১০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক গড়বেন তিনি। ১৩২ ম্যাচের ১২৪ ইনিংসে রোহিতের রান ৪ সেঞ্চুরি ও ২৭ হাফসেঞ্চুরিতে ৩৪৮৭ রান। কোহলি ৯৯ ম্যাচের ৯১ ইনিংসে ৩০ হাফসেঞ্চুরিতে রান করেছেন ৩৩০৮।
প্রসঙ্গত, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে শনিবার (২৭ আগস্ট) শুরু হয়েছে এশিয়া কাপ। অক্টোবর-নভেম্বর টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এবারের এশিয়া কাপের খেলাগুলো হচ্ছে টি-২০ ফরম্যাটে।