রবিবার দিবগত রাতে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। দুই দলেই আছে বর্তমান সময়ের ফুটবলের অন্যতম তারকা- লিওনেল মেসি ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। মেসির জাদুতে ফাইনাল পর্যন্ত উঠে আসে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে, এমবাপ্পের অসাধারণ কীর্তিতে গোটা টুর্নামেন্টেই দাপটের সঙ্গে খেলে ফ্রান্স।ফাইনালেও তাই ঘটল। ডি মারিয়াকে ফাউলের পর পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি থেকে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দলকে এগিয়ে নেন মেসি। এরপর ডি মারিয়ার গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মেসির দল।
দাপটের সঙ্গেই খেলা চলছিল। ৩৬ বছর পর বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন লিওনেল মেসিরা।
প্রথমার্ধের ২১তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে হুলিয়ান আলভারেজের পাওয়া বল বক্স থেকে শট নিতে যাচ্ছিলেন ডি মারিয়া। কিন্তু সেই মুহূর্তে তাকে ধাক্কা দিয়ে বসেন উসমান দেম্বেলে।সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে সহজেই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মেসি। শুধু তা-ই নয়, একমাত্র ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে গ্রুপ পর্ব, শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোল করার কীর্তি গড়েন তিনি। তাছাড়া বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ২৬ ম্যাচ খেলার রেকর্ডও তার।৩৬তম মিনিটে উপমেকানোর ভুলে নিজেদের অর্ধে বল পায় মেসি।
দারুণ দক্ষতায় ম্যাক আলিস্টারকে বল বাড়ান তিনি। টেনে নিয়ে বক্সে আলিস্টার খুঁজে নেন ডি মারিয়াকে। দারুণ এক শটে লরিসকে পরাস্ত করে বল জালে পাঠান জুভেন্টাসের এই ফরোয়ার্ড। ব্যবধান দ্বিগুণ করে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনাযদিও প্রথমার্ধে খুঁজেও পাওয়া যায়নি প্রতিপক্ষের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় কিলিয়ান এমবাপ্পেকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও ছিল একই অবস্থা।
কিন্তু বোতলবন্দী কিলিয়ান এমবাপ্পে যেন গ্রিক রূপকথার মতো ঠিক ছাই থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠলেন। ৭৯ মিনিট পর্যন্ত যাকে অসহায় মনে হচ্ছিল। সেই তিনিই ৯৭ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুই গোল করে বদলে দিলেন ফাইনালের চিত্রনাট্য। ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমবাপ্পে, ৮১ মিনিটে (প্রথম গোলের ৯৭ সেকেন্ডের মাথায়) আবার তিনিই গোল করে দলকে সমতায় ফেরান।
বাঁ দিক থেকে এমবাপ্পে বল দেন থুরামকে। থুরাম আবার ফেরত দেন এমবাপ্পেকে। অসাধারণ ভলিতে বল জালে জড়ান এমবাপ্পে। যেখানে ৭৯ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু এমবাপ্পের এই দ্বিতীয় গোলেই যেন হঠাৎ এলোমেলো হয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ।ম্যাচে ফেরে ফ্রান্স। লুসাইল স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর ২-২ গোলের সমতায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
১০৮ মিনিটে এবার সুপারস্টার মেসির গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু তাও বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি মেসিরা। ৮ মিনিট পর ফের পেনাল্টি। ডি বক্সে এমবাপ্পের শট মন্টিয়েলের হাতে লাগলে পেনাল্টি দেন রেফারি। ১১৬ মিনিটে এমবাপ্পের ফিনিশিংয়ে আবার সমতায় ফেরে ফ্রান্স। হ্যাটট্রিক করেন এমবাপ্পে।