মার্টিনেজের মতো ‘হাস্যকর’ হতে চান না লরিস

মার্টিনেজের মতো ‘হাস্যকর’ হতে চান না লরিস

কাতার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেলেও তার রেশ যেন এখনও রয়ে গেছে। আরও ভাল করে বললে এবার মহারণে এমন কিছু চরিত্র আমরা পেয়েছি, যারা সব দিক থেকে পরিবেশ আলোকিত করে রেখেছিলেন। এরকমই এক চরিত্র হলেন আর্জেন্টিনা দলের গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তিনি বিশ্বকাপ ফাইনালে টাইব্রেকারে শট বাঁচিয়ে আর্জেন্টিনা প্রেমীদের কাছে চিরকালীন নায়ক হয়ে রয়েছেন।

সারা আসরেই তিনি লাস্ট লাইন অব ডিফেন্স পোক্ত রেখেছিলেন। সেই কারণেই পেয়েছেন সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার। কিন্তু এরপর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি আর প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের বিদ্রুপের কারনে তিনি ছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রে। তবে নিজেকে মার্টিনেজের মতো ‘হাস্যকর’ ভাবতে পারছেন না রানার্স আপ দল ফ্রান্সের গোলকিপার হুগো লরিস।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন টটেনহ্যামে খেলা এই গোলরক্ষক। সেই সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজের আচরণ নিয়েও। ফরাসি দৈনিক লে কিপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্টিনেজের আচরণ নিয়ে কথা বলেছেন লরিস। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, মার্টিনেজের আচরণ কতটা খেলোয়াড়সুলভ ছিল? জবাবে লরিস বলেন, ‘কিছু কিছু জিনিস আমার পক্ষে সম্ভব না।নিজেকে হাস্যকর বানানো, প্রতিপক্ষকে উত্ত্যক্ত করা, সীমালঙ্ঘন…এগুলো আমার সঙ্গে যায় না। আমি খুবই বিবেচক ও সৎমানুষ। আমি জানি না ওসব করে কিভাবে জেতা যায়। যদিও এভাবে হারতেও আমার ভালো লাগেনি। ’

গোল্ডেন গ্লাভসজয়ী মার্টিনেজ মাঠে দাঁড়িয়েই অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন।

 

উদযাপন ছিল লাগামছাড়া। এরপর দেশে ফিরে বিজয় শোভাযাত্রায় কিলিয়ান এমবাপ্পের পুতুল নিয়ে মশকরা করেন। এবার লরিস জানালেন, টাইব্রেকারের সময় ফরাসিদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে গেছেন মার্টিনেজ। লরিসের ভাষায়, ‘আসলে সে সব কিছুতেই খুব তৎপর ছিল। উদ্‌যাপনের কথা যদি বলেন, সেটার জন্য এরই মধ্যে সে যথেষ্ট কথা শুনেছে, আর বেশি কিছু বলার দরকার নেই। শ্যুটআউটের সময় সে আমাদের অস্থিতিশীল করে দিতে যত কৌশল পারা যায় কাজে লাগিয়েছে। ’

প্রসঙ্গত, ফ্রান্সের অধিনায়ক হুগো লরিস নিজের সময়ের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হিসেবেই বিবেচিত হবেন। জাতীয় দলে ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে অর্জন কম নয়। কখনোই হয়তো জিয়ানলুইজি বুফন, ইকার ক্যাসিয়াস, ম্যানুয়েল ন্যুয়ার কিংবা থিবো কোর্তোয়ার মতো পাদপ্রদীপের আলো নিজের দিকে টানতে পারেননি, তবে নিজের জায়গায় তিনি অনন্য। ব্যক্তিত্বে তিনি বাকিদের চেয়ে ভিন্ন, খেলায় জয় পরাজয়ের চেয়েও তার কাছে বেশি জরুরি নিজের ব্যক্তিত্বে অটল থাকা। জাতীয় দলের জার্সিতে অর্জনটা অবশ্য কম নয়। ২০১৮ বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে ফ্রান্সকে জিতিয়েছেন তাদের ইতিহাসের দ্বিতীয় শিরোপা। এরপর ২০২১ সালে জিতিয়েছেন উয়েফা নেশন্স লিগ। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপেও দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন। তবে টাইব্রেকারে হেরে গেছে তার দল।

আন্তর্জাতিক