গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। মোনাজাত শেষে সড়ক-মহাসড়ক ধরে দলে দলে বাড়ি ফিরছেন মুসল্লিরা। বাড়িতে ফিরতে কেউ উঠেছেন বাসে, কেউ পিকআপ ভ্যানে, আবার অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে উঠেছেন ট্রেনের ছাদে। তবে ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা যানবাহনের আশায় না থেকে পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।
গত শুক্রবার শুরু হয়েছিল জুবায়েরপন্থীদের ইজতেমা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ৩০ মিনিট এগিয়ে তা শুরু হয় সকাল ১০টায়। মোনাজাত শেষ হয় ১০টা ২০ মিনিটে। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা জুবায়ের।মোনাজাত শেষে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মানুষের ঢল নামে। মুসল্লিদের চলাচলের সুবিধার্থে মোনাজাত শুরুর আগেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। তাই দল বেঁধে মুসল্লিরা একসঙ্গে বাড়ির পথে হাঁটছিলেন। এ সময় অনেকেই ‘আল্লাহু আকবর’ জিকির করছিলেন।
রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে মোনাজাতে অংশ নিতে এসেছিলেন আবদুল আওয়াল। বাড়িতে ফেরার পথে বলছিলেন, ‘অনেক দিন পর এবার ইজতেমা অনুষ্ঠিত হলো। সবার সঙ্গে মোনাজাত ধরতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আল্লাহ আমাদের প্রার্থনা কবুল করুন, এটাই চাওয়া।’আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে স্ত্রী রেহানা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন জসিম উদ্দিন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁরা রাজধানীর বিমানবন্দরসংলগ্ন আশকোনা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। তবে আজ সকালে জসিম ও তাঁর স্ত্রী মানুষের ভিড়ে আবদুল্লাহপুর মোড় পার হতে পারেননি। পরে আবদুল্লাহপুর মোড়ে বসেই তাঁরা মোনাজাতে অংশ নেন।মোনাজাত শেষে জসিম বলেন, ‘এটাই আমাদের প্রথম ইজতেমা। অনেক ইচ্ছা ছিল সবার সঙ্গে ইজতেমার মোনাজাতে অংশ নেওয়ার। শেষ পর্যন্ত ইচ্ছা পূরণ হলো। এত মানুষের সঙ্গে মোনাজাত করতে পারাটাও ভাগ্যের ব্যাপার। আমরা খুব খুশি।’
মোটরসাইকেল নিয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থেকে এসেছিলেন রওনক আহমাদ। তবে টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের নতুন বাজার এলাকায় পৌঁছানোর পরই যানজটে আটকা পড়েন তিনি। পরে আর কোনোভাবেই সামনে এগোতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে সেখানে মোটরসাইকেল রেখে হেঁটেই রওনা দেন তিনি।ইজতেমা মাঠসংলগ্ন বাটা গেট এলাকায় এসে মোনাজাতে অংশ নেন রওনক। তিনি বলেন, ‘অনেক ইচ্ছা ছিল ইজতেমা মাঠে ঢুকে মোনাজাত ধরার। কিন্তু সামনে এগোনোর উপায় ছিল না। তাই মোটরসাইকেলে তালা দিয়ে চলে আসছি। শেষ পর্যন্ত মোনাজাত ধরতে পেরেছি, এটাই আনন্দ।’