দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয়েছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ। আর প্রথম আসরেই ফাইনালে উঠে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। শিরোপার লড়াইয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে আজ শেষ বাধা নেপাল।
দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা ৬টায় সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
চার জাতির এই টুর্নামেন্টে লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে অধিনায়ক শামসুন্নাহার জুনিয়রের হ্যাটট্রিক এবং আকলিমা খাতুনের জোড়া গোলে ভুটানকে ৫-০ ব্যবধানে হারিয়ে শীর্ষ দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। লিগের তিন ম্যাচ থেকে সাত পয়েন্ট লাভ করেছে লাল সবুজের জার্সিধারীরা।
লিগ পর্বের প্রথম ম্যাচে নেপালকে ৩-১ গোলে হারানোর পর ভারতের সঙ্গে গোলশুন্য ড্র করেছিল স্বাগতিকরা। শেষ ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে জয় গ্রুপ সেরার আসনে পৌঁছে দেয় স্বাগতিক বাংলাদেশকে।
একই দিন অনুষ্ঠিত আরেক ম্যাচে ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্স-আপ হিসেবে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নেপাল। লিগ পর্বের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরে গেলেও পরের ম্যাচে ভুটানকে ৪-০ গোলে এবং ভারতকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ছয় পয়েন্ট সংগ্রহ করে তালিকার দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করে হিমালয় কন্যারা।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে নেপালকে হারালেও প্রতিপক্ষ হিসেবে দলটিকে কঠিন বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বাফুফে ভবনে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ছোটন বলেন, ‘ফাইনাল অন্যরকম একটা ম্যাচ হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে। দুই দলই সুযোগ পাবে, যারা কাজে লাগাতে পারবে তারাই সাফল হবে। তবে আমার মনে হয়, ফাইনালে আমার মেয়েরা এগিয়ে থাকবে। যেহেতু ফাইনালে উঠেছি, তাই জয়ের জন্য আমরা সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশের কোচ বলেন, ‘নেপালও শক্তিশালী দল। তারা ভারতকে হারিয়েছে। আমরাও যথেষ্ট শক্তিশালী। ফাইনাল জয়ের জন্য আমরা স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চাই। গ্রুপ পর্বে আমরা নেপালকে হারিয়েছি। এর আগেও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে আমরা তাদের হারিয়েছি। তবে আগামীকাল ভিন্ন একটি ম্যাচ হবে। মেয়েরা ট্রফি জয়ের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’
ফাইনালে বাংলাদেশ নেপালকে বড় কোন হুমকি মনে করছে কিনা প্রশ্ন করা হলে জবাবে ছোটন বলেন, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারত প্রায় একই মানের দল। আর নেপাল সব সময় ভালো একটি দল।
বাংলাদেশ অধিনায়ক শাসুন্নাহার জুনিয়র বলেন, তারা ফাইনালে পৌঁছানোর জন্য যা কিছু করার করেছে। এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য শিরোপা জয় করা। ফাইনালে সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চায় তার দল। নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের মতো খেলতে চায় তার দল। যে ম্যাচে হিমালয় কন্যাদের ৩-১ গোলে হারিয়েছিল তারা।
ফাইনালে ব্যক্তিগত কোন লক্ষ্য আছে কিনা জানতে চাইলে শামসুন্নাহার বলেন, ব্যক্তিগত লক্ষ্যের চেয়ে বড় হচ্ছে দলীয় অর্জন। যেটি তিনি ফাইনালেও দেখতে চান।’
এদিকে নেপালের কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরুং ফাইনাল ম্যাচটিকে দেখছেন গ্রুপ পর্বে হারের প্রতিশোধ হিসেবে। তিনি বলেন,‘আগামীকাল (আজ) ফাইনাল ম্যাচ। আশা করি বাংলাদেশের বিপক্ষে ফাইনালে জয়ের মাধ্যমে আমরা প্রতিশোধ নিতে পারব।’
এক প্রশ্নের জবাবে নেপালি কোচ বলেন, তারা বাংলাদেশ দলের দুর্বলতা সম্পর্কে জানেন এবং আজকের ফাইনালে সুযোগটি অবশ্যই কাজে লাগাবেন।
নেপালের অধিনায়ক প্রীতি রাই বলেন, ফাইনালে পৌঁছানোর জন্য তার দল কঠোর পরিশ্রম করেছে। দলের সবাই শিরোপার দাবিদার, কারণ এটির জন্য তারা প্রচুর শ্রম দিয়েছেন। সাফ ট্রফি নিয়েই তারা ঘরে ফেরার আশা করছেন।