২০১০ সালে বিদ্যুৎ নিয়ে টানাপোড়েনের সময় থেকে নতুন সংযোগ পেতে বহুতল ভবনে বাধ্যতামূলকভাবে স্থাপন করা সোলার প্যানেল (সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন সরঞ্জাম) এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্যানেল থেকে গ্রাহক কোনো বিদ্যুৎ তো পায়ই না, অন্যদিকে প্যানেল পরিদর্শনের নামে চলে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের চাঁদাবাজি। ধারণা করা হচ্ছে, বিশেষ মহল লাভবান হতে এ যন্ত্রণা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রাহকের ঘাড়ে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত ১২ বছরে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আনা এসব নামসর্বস্ব সোলার প্যানেলের বড় অংশই এখন অকেজো। ২০ বছর মেয়াদি এসব ব্যয়বহুল সোলার প্যানেল টিকছে না এক বছরও। বর্জ্য হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ভাঙারির দোকানে। ছাদের ওপর শোপিস হিসেবে থাকা সোলার প্যানেলে শুকানো হচ্ছে কাপড়।
ভবন মালিক ও আবাসন ব্যবসায়ীরা বলছেন, সোলার প্যানেল বাধ্যতামূলক করায় মূলত এ প্রযু্িক্ত আমদানির সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যবসায়ী আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। কিনতে হয় কর্তৃপক্ষের পছন্দের কোম্পানি থেকে। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের কোনো লাভ হয়নি, উল্টো সাধারণ মানুষের হয়রানি বেড়েছে। আছে হুমকি-ধমকিও। রাজধানীর খিলক্ষেতের একটি ছয় তলা ভবনের কেয়ারটেকার তোফায়েল বলেন, ৪ লাখ টাকা খরচ করে সোলার প্যানেল বসানোর মাস ছয়েক পর ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেছে। আর ঠিক করা হয়নি। আশপাশের বেশির ভাগ ভবনে কোনো সোলার প্যানেলই নেই। ভাটারার একটি বাড়ির মালিক শেখ হাতিম বলেন, ঋণ করে ভবন বানানোর পর ৩ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করতে হয় সোলার প্যানেল বসাতে। না হলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় না। পরিচিতদের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, অনেকে সোলার প্যানেল ভাড়ায় আনেন। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার পর ফেরত ফিরিয়ে দেন। সত্যি সত্যি প্যানেল বসালেও বছর না ঘুরতেই নানা ত্রুটি দেখা দেয়। জ্বলে না কোনো বাতি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারীরা পর্যবেক্ষণে এলে ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করতে হয়। পুরোটাই অপচয়। কারও সৌরবিদ্যুৎ প্রয়োজন হলে তিনি তো নিজ ইচ্ছাতেই লাগাবেন।বিস্তারিত