ব্যাংক খাতের ৪৩ শতাংশ আমানতই কোটিপতিদের।

ব্যাংক খাতের ৪৩ শতাংশ আমানতই কোটিপতিদের।

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বাড়ছে দ্রুত গতিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালের শেষ তিন মাসে সাড়ে তিন হাজারের মতো কোটিপতির হিসাব বেড়েছে। আর গত এক বছরে বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার। সবমিলে গত বছরের ডিসেম্বর শেষে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে এক কোটি টাকা বা এর বেশি আমানত রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। বর্তমানে এ খাতের মোট আমানতের প্রায় ৪৩ শতাংশই

এই কোটিপতিদের। তবে কোটি টাকার আমানত হিসাবের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোটিপতির আমানত হিসাব বাড়ার মানে হলো- একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষের কাছে বেশি সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়া। এতে সমাজে আয় বৈষম্যও বাড়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬৪টি। এসব হিসাবে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি, যাদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা; যা ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের প্রায় ৪২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এর তিন মাস আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতির অ্যাকাউন্ট ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৫২০টি। এসব অ্যাকাউন্টে আমানতের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা বা ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ। ফলে তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪২৬টি। ব্যাংক খাতের মোট অ্যাকাউন্টের তুলনায় তিন মাসের এই প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশের কম।

এর আগের বছর, তথা ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টি। ফলে গত বছরের পুরো সময়ে দেশে কোটিপতির হিসাব বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ৯৭০টি। আর ২০২১ সালে ব্যাংকে কোটিপতির হিসাব বেড়েছিল আরও বেশি, প্রায় ৮ হাজার ৮৬টি।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ১ কোটি ১ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৭ হাজার ১৬৭টি, যা তিন মাস আগেও ছিল ৮৪ হাজার ৫০৩টি। এ সময়ে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাব সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৬২টি, গত সেপ্টেম্বরে যা ছিল ১ হাজার ৬৬০টি। এ ছাড়া গত ডিসেম্বরে ৪০ কোটি ১ টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭৭টি, যা তিন মাস ছিল ৫২৩টি।

অন্যদিকে গত ডিসেম্বর শেষে ৫ কোটি ১ টাকা থেকে ১০ কোটির মধ্যে ১১ হাজার ৯৪৫টি, ১০ কোটি ১ টাকা থেকে ১৫ কোটির মধ্যে ৩ হাজার ৮৪৫টি, ১৫ কোটি ১ টাকা থেকে ২০ কোটির মধ্যে ১ হাজার ৮৩৩টি, ২০ কোটি ১ টাকা থেকে ২৫ কোটির মধ্যে ১ হাজার ১৪৩টি, ২৫ কোটি ১ টাকা থেকে ৩০ কোটির মধ্যে ৮৮৭টি, ৩০ কোটি ১ টাকা থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৪৭২টি এবং ৩৫ কোটি ১ টাকা থেকে ৪০ কোটির মধ্যে ৩১৫টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

অর্থ বাণিজ্য