পদ্মা সেতু, শেয়ারবাজার এবং পাঁচতারকা হোটেলে বিনিয়োগের স্বপ্ন দেখিয়ে জালিয়াতি করেছিলেন প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ও তার ঘনিষ্ঠরা।
এতদিন জানা গিয়েছিল তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন শুধু সাধারণ মানুষ। কিন্তু যুগান্তরের দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে, কারসাজির জালে আটকা পড়েছেন সমাজের অনেক নামিদামি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিও। হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা।
তবে তদন্ত সংস্থার মুখোমুখি হওয়াসহ নানা শঙ্কায় টাকা ফেরত পেতে তেমন কোনো সক্রিয় তৎপরতা দেখাচ্ছেন না তারা।
প্রসঙ্গত, চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন পিকে হালদার ও তার ঘনিষ্ঠরা। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সর্ভিসেস লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, যেসব প্রভাবশালী ব্যক্তি পিকে হালদারের চটকদার প্রচারণায় আকৃষ্ট হয়ে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডে মোটা অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত এক শীর্ষ নেতার ৫ কোটি, সিটি করপোরেশনের এক মেয়রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১০ কোটি, আরেক মেয়রের আপন ভাতিজার ৩ কোটি, বিভিন্ন কারণে আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের কয়েক কোটি, সাবেক অর্থমন্ত্রীর ভাইয়ের ৩ কোটি, বর্তমান একজন মন্ত্রীর কয়েক কোটি, দেশের স্বনামধন্য সাংস্কৃতিক পরিবারের প্রায় ১২ কোটি এবং একজন বিখ্যাত জাদুশিল্পীর মোটা অঙ্কের টাকা।
এছাড়া রাষ্ট্রের একজন উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তির মেয়ের জামাতা এবং ওয়ান-ইলেভেনের সময় দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে ছিলেন-এমন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির টাকাও খোয়া গেছে পিপলস লিজিংয়ে বিনিয়োগের মাধ্যমে।
গুলশান এবং বনানী এলাকার অনেক বিত্তশালীর টাকাও বিনিয়োগ করা হয়েছিল এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। তদন্ত সংস্থার মুখোমুখি হতে হবে-এমন আশঙ্কায় বিনিয়োগ করা টাকা ফিরে পেতে খুব একটা দৌড়ঝাঁপ করছেন না তারা। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা টাকা ফেরত পেতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন।বিস্তারিত