মানবদেহে যকৃত বা লিভারে শতকরা ৫-১০ ভাগের বেশি চর্বি জমা হলে তাকে ফ্যাটিলিভার বলা হয়। এই রোগের লক্ষণ প্রকাশিত না হওয়ায় ঝুঁকি বেশি থাকে।
আগে থেকে সচেতন না হলে এ রোগ থেকে দীর্ঘমেয়াদি লিভার প্রদাহ হয়, যা থেকে লিভার সিরোসিস ও এর জটিলতায় লিভার ক্যানসার হতে পারে।
ফ্যাটিলিভারের চিকিৎসা মূলত জীবনযাপন প্রণালির পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে। সঠিক খাদ্যাভাস ও শরীরচর্চার মাধ্যমে শরীরের ওজন কমানো ও ডায়াবেটিস বা রক্তের চর্বি ইত্যাদি রোগের চিকিৎসার মাধ্যমে ফ্যাটিলিভার রোগ থেকে নিরাময় লাভ করা যায়।
ফ্যাটিলিভার রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন কিনা কিংবা রাখতে খাবার দাবার কী হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।
পবিত্র রমজান মাসে ফ্যাটিলিভারের রোগীদের জন্য সুফল বয়ে আনার সুযোগ তৈরি হয়। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ডায়াবেটিস বা অন্যান্য রোগের জন্য ইনসুলিন/ওষুধের ডোজ পরিবর্তন সাপেক্ষে ফ্যাটিলিভারের রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে-সুষম ইফতার, রাতের খাবার, সেহরি গ্রহণের পাশাপাশি স্বাভাবিক কাজকর্ম করে এ মাসে ওজন কমানোর মাধ্যমে ফ্যাটিলিভারের রোগীরা উপকৃত হতে পারেন। এতে লিভারে চর্বির পরিমাণ ও প্রদাহ যেমন হ্রাস পায়, সার্বিকভাবে লিভারের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
সাধারণভাবে ইফতারের সময় চিনি ও মিষ্টান্ন ও তেলে ভাজা খাবার বর্জন করে তাজা ফল ও সবজি জাতীয় খাবার ও পরিমিত শর্করা গ্রহণ করা উচিত। রাতের খাবার ও সেহরিতে পর্যাপ্ত সবজি ও মাছ গ্রহণ করার পাশাপাশি সীমিত পরিমাণে মুরগির গোশত রাখা যেতে পারে; গরু, খাসির গোশত বর্জন করা উচিত। ফলের মধ্যে পেয়ারা, জাম্বুরা, আমলকি ইত্যাদি টক ফল পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে পারেন।
বাজারের খোলা খাবার, ফাস্ট ফুড, প্রসেসড ফুড, চিনিযুক্ত পানীয়, ঘি, ডালডা, তেলে ভাজা খাবার বর্জন করলে ফ্যাটিলিভারের পাশাপাশি অন্য রোগীরাও উপকার পাবেন।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস, স্বাভাবিক কাজকর্ম বা শরীরচর্চা ঠিক রেখে ফ্যাটিলিভারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখতে পারবেন, তবে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া সমীচীন।