মুদ্রাবাজারে তারল্যের জন্য প্রধান নির্ভরতা ছিল সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক। এ চার ব্যাংককে ধরা হতো কলমানি বাজারে অর্থ ধারের ভরসাস্থল। সংকটে পড়লে নগদ অর্থের জন্য দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারাও দ্বারস্থ হতেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে। পরিস্থিতি এখন একেবারেই ভিন্ন। কলমানি বাজারের দাতা থেকে তারা হয়ে উঠেছে প্রধান ঋণগ্রহীতা। যদিও এ ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ধার করেছে অগ্রণী ও জনতা ব্যাংক। আর প্রতিদিন ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ধার করতে হয়েছে রূপালী ব্যাংককে। সরকারি আমানত বাড়ায় সোনালী ব্যাংকের পরিস্থিতি এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত বছরের শেষের দিকে অগ্রণী ব্যাংকের দৈনিক ধারের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। কলমানি বাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও রেপো ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) হিসেবে এ ধার নেয়া হচ্ছে।
দেশের কলমানি বাজারের মোট লেনদেনের অর্ধেক অর্থই বর্তমানে ধার করছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। গত মঙ্গলবার মোট লেনদেন হয়েছিল ৬ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা, তার ৩ হাজার ৯৩ কোটি টাকাই নিয়েছে জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক। একই দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ চার ব্যাংক রেপো ও এএলএস হিসেবে ধার করেছে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, নিজেদের সক্ষমতার চেয়েও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো আমদানির ঋণপত্র (এলসি) বেশি খুলে ফেলেছে। এখন এলসি দায় সমন্বয়ের জন্য প্রতিনিয়ত তাদের বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে। তাতে আমানতে টান পড়ছে। আবার বিতরণকৃত ঋণ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী অর্থ আদায় হচ্ছে না। এ কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান চার ব্যাংকেরই ট্রেজারি ব্যবস্থাপনার শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চাহিদা অনুযায়ী ধার না পেলে ব্যাংকগুলো সিআরআর (ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও) ও এসএলআর (স্ট্যাটিউটরি লিকুইডিটি রেশিও) সংরক্ষণেও ব্যর্থ হতো।বিস্তারিত