রাজধানীর অধিকাংশ মার্কেটই ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিস

রাজধানীর অধিকাংশ মার্কেটই ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিস

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফায়ার সার্ভিস, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসআই) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (জিজিএফআই) একটি সমন্বিত দল গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানী সুপার মার্কেট, গাউছিয়া, নিউমার্কেট, চকবাজার ও ঠাঁটারি বাজারের কয়েকটি মার্কেটসহ রাজধানীর প্রায় সব মার্কেটই অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে আছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসআই) ও প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (জিজিএফআই) একটি সমন্বিত দল গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

পরিদর্শক দলের প্রধান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা সদর জোন-১-এর উপসহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ বলেন, ‘ঢাকা শহরে অনেক মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ আছে। এর মধ্যে ঠাঁটারিবাজারের একটা মার্কেট আছে, রাজধানী সুপার মার্কেট, নিউমার্কেট, চকবাজারসহ অনেক মার্কেট আছে। এই মার্কেটগুলো ফায়ার সার্ভিসের চাহিদা ফুলফিল করতে পারেনি। ঢাকার বেশির ভাগ মার্কেটই আমাদের চোখে ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা অনুরোধ করব এই মার্কেটগুলো যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়।’

বজলুর রশিদ বলেন, ‘গাউছিয়া মার্কেটে ছয়টা সিঁড়ি আছে। সিঁড়ির কার্নিশে দোকান রয়েছে। এই সিঁড়িগুলো সরাতে হবে। ২০২০ সালের শেষের দিকে আমরা এখানে একটা মহড়া করেছিলাম। এই মার্কেটে ফায়ার এক্সটিংগুইশার আছে। ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছাড়া যা যা থাকা দরকার তা নেই। অন্যান্য ফায়ার নির্বাপণব্যবস্থা রাখার জন্য আমরা সুপারিশ আকারে দেব।’

রাজধানীর সুপার ও গাউছিয়া মার্কেটও ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিসের ডিজিরাজধানীর সুপার ও গাউছিয়া মার্কেটও ঝুঁকিপূর্ণ: ফায়ার সার্ভিসের ডিজি
এই মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ কি না, জানতে চাইলে বজলুর রশিদ বলেন, ‘আমরা আগে এখানে মহড়া করেছি। মার্কেট আগের থেকে উন্নত, তবে এখনো ঝুঁকিমুক্ত নয়। কখনো এখানে আগুন লাগলে তা নেভাতে প্রতিবন্ধকতা আছে। এখানে পর্যাপ্ত পানির উৎস নাই। এই মার্কেটে আগুন নির্বাপণের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না। আর কী কী করতে হবে এই মার্কেটে, সেটা আমরা সুপারিশ আকারে দেব। এই মার্কেটে ফায়ার টিম আছে বলে জানিয়েছে মালিক সমিতি, তবে তার অস্তিত্ব পাইনি।’

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গাউছিয়া মার্কেট মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ কামরুল হাসান বাবু বলেন, ‘দুই বছর আগে ফায়ার সার্ভিস যে নির্দেশনা দিয়েছে, তা পরিপূর্ণ করেছি। আমাদের ফায়ার সার্টিফিকেট আছে। এ ছাড়া সব ভবনেই কিছু ত্রুটি থাকে, আমাদের এখানে আউটডোরসহ যে ত্রুটি আছে, তা দুই-এক দিনের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করব।’

কথা হয় গাউছিয়া মার্কেটের তৃতীয় তলার সিঁড়িতে দেওয়া রোমিও-জুলিয়েট নামে একটি দোকানের মালিক মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে এখানে দোকান করছি। মাসে ২০ হাজার টাকা ভাড়া দিই ৷ পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে এই দোকান ভাড়া নিয়েছি।’

‘এমন আগুন জীবনে দেখিনি’‘এমন আগুন জীবনে দেখিনি’
মার্কেটের সিঁড়ি আটকে মালামাল রাখতে দেখা গেছে ৷ আগুন লাগলে তো এই সিঁড়ি দিয়ে চলাচল করতে সমস্যা হবে। এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলীর বলেন, ‘আমরা সব সময় সিঁড়িতে এভাবে মালামাল রাখি না। ঈদের কারণে এখন এভাবে রাখা হচ্ছে।’ তবে এভাবে সিঁড়ি আটকে মালামাল রাখা ঝুঁকিপূর্ণ, সেটা তিনি স্বীকার করেছেন।

মার্কেটের সিঁড়িতে দোকান নিয়ে মালিক সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান বাবুর কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘এসব দোকান বসাতে সমিতির কোনো দায় নেই। কর্তৃপক্ষ যারা দোকান বরাদ্দ দিয়েছে, তারা জানে এ বিষয়ে। সমিতির সভাপতি হিসেবে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কাজ আমার না। এর পরও ফায়ার সার্ভিস এসব দোকান সরাতে বলছে, আমরা কমিটির সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

মার্কেট যখন নির্মাণ করা হয়েছে, তখন থেকেই সিঁড়িতে দোকান রাখা হয়েছে বলে জানান দোকানিরা। সিঁড়ির দোকানগুলোর জন্য ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক ভাড়া গুনতে হয়। অ্যাডভান্স ৫ লাখ।

জাতীয়