পবিত্র রমজান মাসে বৈশাখের প্রচ- রৌদ্রতাপে উত্তপ্ত বাতাসে দেশের মাঠ-ঘাট পুড়ে ছারখার হওয়ার উপক্রম। ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। আগুনের হল্কা নিয়ে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এ সময় রাজনীতিতে দৃশ্যমান কোনো উত্তাপ নেই। রাজপথের কার্যত নীরব-নিথর। বিএনপির ‘পথযাত্রা’ আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশ’ উধাও। দৃশ্যমান কোনো রাজনীতি নেই। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওয়াশিংটন ছুটে যাওয়া, দেশে ফিরে ‘রাখঢাক’ বক্তব্য দেয়া, বিএনপি নেতাদের পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় ফেয়ার নির্বাচন আমরাও তাই চাই’ ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ‘যুক্তরাষ্ট্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যপারে কিছু বলেনি’ বক্তব্য এবং পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পর বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাক্ষাতে প্রতীয়মান হচ্ছে দেশের রাজনীতি তথা আগামী নির্বাচন ইস্যুতে ভেতরে ভেতরে কিছু একটা চলছে।
বৈশাখের তাপমাত্রার উত্তপ্ততার মতো রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ততা দৃশ্যমান না হলেও নির্বাচন ইস্যুতে পর্দার আড়ালে ‘রাজনীতির ঝড়োহাওয়া’ বইছে। সেই ঝড়োহাওয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির নেতাদের ঘাম ছুটলেও সুবিধাবাদী দলগুলোর নেতাদের গায়ে কোনো আঁচ লাগছে না। নৌকায় চড়ে এমপি-মন্ত্রী হওয়া বাম-ডান-মধ্যপন্থী নেতারা নিরাপদ দূরত্বেই রয়েছেন। তাদের ভাবখানা ঝড়ঝাপটা সামলাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আর আমরা নিরাপদে থেকে নৌকায় চড়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো এবারও নির্বাচনের নদী পাড় হবো।
পর্দার আড়ালে কি হচ্ছে সেটা নীতি নির্ধারক পর্যায়ের নেতারা ছাড়া সাধারণ মন্ত্রী-এমপিরা জানেন না। ফলে অন্ধকারে থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা একে অন্যের গায়ে ঢিল ছুঁড়ছেন। বাকযুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছেন। আসলে বাংলাদেশের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, কানাডাসহ উন্নয়ন সহযোগী প্রভাবশালী দেশগুলো খুবই তৎপর। নানা প্রক্রিয়ায় সেই তৎপরতার প্রকাশ ঘটেছে। এর মধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে আমন্ত্রণ জানান। গত ১০ এপ্রিল ওয়াশিংটনে ব্লিঙ্কেন-ড. মোমেনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানের ‘মডেল’ নির্বাচন দেখতে চায়। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা পৃথিবী বাংলাদেশের নির্বাচন দেখার জন্য তাকিয়ে রয়েছে।বিস্তারিত