কাদের, সুজন, জাহিদ বা মীর তানজিল– এ রকম বিভিন্ন নামে খোলা হয়েছে স্থায়ী আমানত বা এফডিআর। অপ্রদর্শিত আয়ের তথ্য গোপন করতে ব্যাংকটির বিজয়নগর শাখায় অন্তত ২২৫টি ভুয়া এফডিআরের সন্ধান পেয়েছে বিএফআইইউ। সব এফডিআর ফরমে গ্রাহকের ব্যক্তিগত ও নমিনি-সংক্রান্ত তথ্যের ঘর ফাঁকা; দেওয়া হয়নি জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি। অর্থের উৎস বিষয়েও কিছু বলা নেই। ভিন্ন ভিন্ন নামে এফডিআর হলেও সব ফরমে একই সই এবং অভিন্ন মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। বেনামি এসব এফডিআরের আসল সুবিধাভোগী সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের পরিচালক ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নেওয়াজ।
২০২০ সাল থেকে ব্যাংকের বিজয়নগর শাখাকে ব্যবহার করে তিনি এ রকম হিসাব পরিচালনা করে এলেও এত দিন তা আড়ালে ছিল। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) গত জানুয়ারি মাসের এক তদন্তে প্রথমে এ জালিয়াতি ধরা পড়ে। বিএফআইইউ প্রাথমিকভাবে ২২৫টি বেনামি এফডিআর চিহ্নিত করলেও প্রকৃত হিসাব আরও অনেক বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। টাকা জমা, উত্তোলন– সবই হয়েছে সন্ধ্যার পর। শাখাটির ব্যবস্থাপক মো. ইসলামুল হক এবং হিসাব পর্যালোচনাকারী ও নিশ্চিতকারী কর্মকর্তা খন্দকার নূরে ইমাম বেনামি এসব হিসাব খুলতে সহায়তা করেন। এ ঘটনায় ১৬ লাখ টাকা জরিমানা করে তা আদায় করেছে বিএফআইইউ। মোহাম্মদ নেওয়াজকে ব্যক্তিগতভাবে ৫ লাখ, ব্যাংককে ১০ লাখ এবং শাখা ব্যবস্থাপককে ব্যক্তিগতভাবে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি চেকের বিপরীতে জরিমানার টাকা পরিশোধ করেন নেওয়াজ। এরপর ২৮ মার্চ আবার বিএফআইইউর সিদ্ধান্তের স্থগিতাদেশ চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন। আগামী ২৫ এপ্রিল রিটের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। জানা গেছে, বিএফআইইউর সিদ্ধান্ত মেনে জরিমানার অর্থ পরিশোধের পর আবার রিট করা নিয়ে ব্যাংকের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে। গতকাল সোমবার ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কয়েকজন পরিচালক এ বিষয়ে জরুরি একটি বৈঠক করেন। সার্বিক বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মোহাম্মদ নেওয়াজের ব্যক্তিগত টেলিফোন নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায়নি।বিস্তারিত