এবারের ঈদযাত্রায় ৩৪১ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৫৫

এবারের ঈদযাত্রায় ৩৪১ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৫৫

পবিত্র ঈদুল ফিতরে যাতায়াতে দেশের সড়ক মহাসড়কে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনার ৩২৮ জন নিহত এবং ৫৬৫ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ পথে সম্মিলিতভাবে ৩৪১টি দুর্ঘটনায় জন ৩৫৫ নিহত ও ৬২০ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

মঙ্গলবার সকালে নগরীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই তথ্য তুলে ধরেন।

সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রতিবেদনটি তৈরি করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদ কেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রার সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘ ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহণ ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত গরমসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৪ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। এটি ঈদের ছুটি এক দিন বাড়ানোর সুফল।

দেশের সবকটি সড়ক পাশাপাশি পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর ১৮ দশমিক ২ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারীর কারণে এবারের যাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। এ কারণে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, প্রাণহানী ২১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।

ঈদযাত্রা শুরুর দিন ১৫ এপ্রিল থেকে দিন শেষে কর্মস্থলে ফেরা ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ নিহত হয়েছেন, ৫৬৫ জন আহত হয়েছেন। বিগত ২০২২ সালের ঈদুল ফিতরে যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, প্রাণহানী ২১ দশমিক ১ শতাংশ, আহত ৩০ শতাংশ কমেছে।

উল্লেখিত সময়ে রেলপথে ২৭টি ঘটনায় ২ নিহত ও ৫৫ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ২২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৭ জন নিহত, ১২০ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ, নিহতের ৫১ শতাংশ এবং আহতের ২১ শতাংশ প্রায়।

এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৮৮ চালক, ১৬ পরিবহণ শ্রমিক, ৪২ পথচারী, ৪৮০ শিশু ১৭ শিক্ষার্থী, ১ সাংবাদিক, ৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৪ শিক্ষক, ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৩২ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় মিলেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিক এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-ভ্যান করি, ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কার মাইক্রো জিপ, ৪ দশমিক ৬ শতাংশ নছিমন-করিমন ট্রাক্টর-লেগুনা মাহিদা, ৬ দশমিক ৭ শতাংশ অটোরিক্সা, ১২ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যাটারি রিক্সা-ইজিবাইক-ভ্যান সাইকেল ও ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

সংগঠিত দুর্ঘটনার ২৬ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৩৭ দশমিক ২ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনায়, ২০ দশমিক ৪ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ার ঘটনায়, ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

জাতীয়