লোডশেডিং মোকাবিলায় নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও মুক্তি মিলছে না শিগগিরই। চলতি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির দিনে অবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকায় কিছুটা স্বস্তি মিললেও লোডশেডিংয়ের কবল থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। ঘন ঘন বিদ্যুৎবিপর্যয়ে বিরক্ত গ্রাহকরা। তাপমাত্রা নিম্নমুখী হওয়ায় বিদ্যুতে তুলনামূলক চাহিদা কমেছে। এতেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ব্যর্থ বিদ্যুৎ বিভাগ। সংশ্লিষ্টরা বলছে, ডলার সংকটে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে রাজি হচ্ছে না ব্যাংকগুলো। কয়লা, জ্বালানি তেলের অভাবে বেকায়দায় পড়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিভাগ। চলমান বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় চলতি বছরের ভরসা ছিল রামপাল, পায়রা ও আদানির বিদ্যুৎ। কিন্তু প্রয়োজনী কয়লার সংস্থান না থাকায় রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে চার মাসে তিনবার উৎপাদন বন্ধ করতে হয়েছে। এদিকে কয়লা সংকটের কারণে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ করে দতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত ২৫ মে এই উৎপাদন বন্ধ করা হয়। বাকি ইউনিটও কয়েক সপ্তাহের জন্য বন্ধ হতে পারে শিগগিরই। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সমগ্র বরিশাল ও খুলনা এবং ঢাকার কিছু অংশের জন্য বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্য উৎস। কয়লার জোগান না হলে এই সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অন্য ইউনিটটি থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
দেশের সর্ববৃহৎ কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সূত্র বলছে, তাদের কাছে মাত্র ৫০ হাজার টন কয়লা মজুত রয়েছে এবং দুটি ইউনিটের প্রতিটিতে দৈনিক প্রায় ছয় হাজার টন কয়লা প্রয়োজন। সে হিসাবে ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ হতে আর দেরি নেই। বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা করে এবং ৫০ শতাংশ শেয়ার থাকা চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি) কয়লার টাকা দেয়। বিল পরিশোধ করে দেয়ার ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছ থেকে অর্থ আদায় করে সিএমসি।
গত ২৭ এপ্রিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, পিডিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে বিসিপিসিএল জানায়, ছয় মাসের বেশি বকেয়া থাকায় সিএমসি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বিপিডিবি এখনো পাওনা পরিশোধ করতে পারেনি। বিসিপিসিএল সূত্র বলছে, প্রায় ৩০ কোটি ডলার বকেয়া ছিল এবং কয়লা পরিশোধের বিষয়ে পিডিবি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আলোচনা চলছে।বিস্তারিত